বাসস
  ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:২৮

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে ভারত

চেন্নাই, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : আগামীকাল চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে স্বাগতিক ভারত। বিশ্ব  ক্রিকেটের দুই হেভিওয়েট সুপার পাওয়ার এই ম্যাচের মাধ্যমে একে অপরের সাথে ১৫০তম বার  মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত মাহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে ২০১১ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছিল। এবার আবারো ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে চায় রোহিত শর্মার নেতৃত্বধানী ভারত। 
কিন্তু দুই দলের লড়াইয়ে কিছুটা হলেও পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে রয়েছে। ৮০’র দশকে   শুরু হবার পর এখনো পর্যন্ত দুটি দেশ একে অপরের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই সীমিত ওভারের ম্যাচে মাঠে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মুখোমুখি লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৮৩ ম্যাচে, ভারতের জয় ৫৬টিতে, ১০টি ম্যাচে কোন ফল হয়নি। 
এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত বিশ^কাপের দুই প্রস্তুতি ম্যাচের একটিও বৃষ্টির কারনে খেলতে পারেনি। অথচ গৌহাটি থেকে দীর্ঘ ৩৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে থিরুবানান্তপুরামে গিয়েছিল রোহিত শর্মার দল। ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রস্তুতির সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে না পারায় অবশ্য রোহিত খুব একটা হতাশ নন। এ বিষয়ে  ভারতীয় অধিনায়ক বলেছেন, ‘ঐ দিনগুলোতে বিশ্রাম পাওয়ায় আমি খুশী হয়েছি। কারন প্রচন্ড গরমে আমাদের খেলতে হতো। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। এশিয়া কাপে আমাদের চারটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলেছি। আমরা সবাই পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। একটি দল হিসেবে এখন আমাদের বিশ^কাপে নিজেদের প্রমানের সময় এসেছে। ভারতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে খেলার জন্য যাওয়া আমাদের কাছে কোন ব্যপার নয়, আমরা এর সাথে মানিয়ে নিয়েছি। সব মিলিয়ে টুর্ণামেন্টে আমরা যেভাবে এসেছি তাতে আমি খুশী।’
এশিয়া কাপে শ্রীলংকাকে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জয়  এবং এরপর ঘরের মাঠে তিন ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে   র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে থেকে বিশ^কাপে মাঠে নামতে যাচ্ছে ভারত। 
রোহিত বলেন, ‘চেন্নাইয়ে প্রথম ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। জয় দিয়ে শুরু করাই আমাদের লক্ষ্য। নিজেদের সেরা কম্বিনেশন নিয়েই মাঠে নামবো। আমরা সবাই ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। এখন আর পিছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই, কাল থেকে সকলের কঠিন পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।’
অন্য দিকে সর্বোচ্চ  পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া বরাবরের মতই ফেবারিট হিসেবে আসর শুরু করতে যাচ্ছে। গত মাসে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত হলেও শেষ ম্যাচে সান্তনার জয় দিয় আত্মবিশ^াস ফিরিয়েছে। ডেভিড ওয়ার্নার, মিশেল মার্শ ও মার্নাস লাবুশেন  ঐ ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দলে ফিরেই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ম্যাক্সওয়েল ৭৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দিয়েছেন। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছেন তারা সবকিছুর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত, ‘সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতে আমরা বেশ কিছু ওয়ানডে ম্যাচ খেলেিেছ। এমনকি এখানে এসে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলারও সুযোগ পেয়েছি। সে কারনেই মনে হচ্ছে আমরা বেশ কিছু যাবত  ধারাবাহিক ক্রিকেটের মধ্যে  আছি। ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্করা দলে ফিরে নিজেদের প্রমান করেছেন। এখন বিশ^ আসরে খেলার অপেক্ষা।’
ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ^কাপে একমাত্র দল হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ সালে শিরোপা জয়ের মাধ্যমে হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়ন হবার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। কামিন্স বলেন, ‘২০১৫ সালে খেলা দলটি থেকে দুইজন বর্তমান দলে রয়েছে, যাদের নিয়ে আমরা আত্মবিশ^াসী হতে পারি। আমি বিশ^াস করি ২০০০’র দশক শুরু হবার আগে থেকেই আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রমান করেছি। সত্যিকারার্থেই  ওয়ানডে ফর্মেট আগেই  অস্ট্রেলিয়ান দলের সাথে দারুনভাবে মানিয়ে গেছে। বিশ^কাপে আমাদের অতীত রেকর্ডও বেশ সমৃদ্ধ। আর সেগুলোই আরো একটি ইতিহাস রচনার পথে আমাদের সহযোগিতা করবে।’