বাসস
  ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:০৪

বিশ্বকাপে সঠিক সময়ে নিজেদের প্রমাণ করেছে অস্ট্রেলিয়া

কলকাতা, ১৪ নভেম্বর ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : বৃহস্পতিবার কলকাতায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবেলা করবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সেমিফইনালকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ পেসার মিচেল স্টার্ক বলেছেন, বিশ^কাপের শুরুটা ভাল না হলেও সঠিক সময়ে নিজেদের প্রমান করেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর টানা সাত ম্যাচে জয়ী হয়ে সেমিফাইনালের টিকেট পেয়েছে অসিরা। 
দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া উভয় দরই গ্রপ পর্বে সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। বিশ^কাপের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। এরপর ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটের পরাজয় দিয়ে বিশ^কাপ শুরু করার পর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১৩৪ রানে পরাজিত হয়। 
টানা ম্যাচ খেলার ব্যস্ত সূচী সম্পর্কে স্টার্ক বলেছেন, ‘আমরা কিছুদিন বেশ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা খেলতে গিয়েছিল তাদের জন্য অন্তত ১৫ বার বিমানে চড়তে হয়েছে। একইসাথে ১০ থেকে ১১ সপ্তাহ একেবারে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। এটা বিশ^কাপ, এখানে খেলার আবহই ভিন্ন। আমরা সবাই এটা বুঝতে পারছি। টুর্নামেন্টে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য সঠিক সময়ে আমরা জ¦লে উঠেছি।’ 
বাঁ-হাতি এই পেসার আরো বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে শুরু করতে চেয়েছিলাম সেটা যখন করতে পারিনি তখনই নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করি। সবাই যার যার অবস্থান  থেকে অবদান রাখার চেষ্টা করেছে। তারই ফল হিসেবে আরো একটি বিশ^কাপর সেমিফাইনালে আমরা খেলতে যাচ্ছি।’
বিশ^কাপে সবচেয়ে সফল দল হিসেবে এখনো শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৮৭ (ভারত), ১৯৯৯ (ইংল্যান্ড), ২০০৩ (দক্ষিণ আফ্রিকা), ২০০৭ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ও ২০১৫ (অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড) বিশ^কাপের শিরোপা জয়ী দলটি রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা থেকে আর মাত্র দুই ম্যাচ দুরে রয়েছে। এছাড়া ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মত আয়োজিত বৈশি^ক এই সর্বোচ্চ টুর্ণামেন্টে রানার্স-আপে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৬ সালে আবারো ফাইনালে উঠে শ্রীলংকার কাছে পরাজতহয়ে রানার আপ  হথে হয়েছিল অসিদের।  এছাড়া ২০১১ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে ও ২০১৯ বিশ^কাপের সেমিফাইনালে খেলেছে। 
২০১৫ ওয়ানডে ও ২০২১ টি-টোয়েন্টি  বিশ^কাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন স্টার্ক। কলকাতার আইকনিক ইডেন গার্ডেন্সে বৃহস্পতিবারের ম্যাচকে সামনে রেখে স্টার্ক বলেছেন, ‘এটা  একটি নতুন  ম্যাচ। আমি ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতোমধ্যেই অনেক ম্যাচ খেলে ফেলেছি, বড় ম্যাচে পারফর্মও করেছি। কিন্তু এখন এসব বলার সময় নয়। আমাদের এই দলটি অত্যন্ত শান্ত, বিশেষ করে তরুণদের উপর নির্ভরশীল। কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড়রা বিশ^কাপে ভাল করছে, এটা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যতের জন্য ভাল একটি দিক।’
১৯৯৯ ও ২০০৭ বিশ^কাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুইবার পরাজিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। উভয় আসরেই অস্ট্রেলিয়া শিরোপা জয় করেছিল। 
৩৩ বছর বয়সী স্টার্ক ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত ১১৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ^কাপে  যথাক্রমে ২২ ও ২৭ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন।  সব মিলিয়ে তার ঝুলিতে রয়েছে ২৩০টি ওয়ানডে উইকেট। এবারের আসরে তিনি এবং আরেক সতীর্থ পেসার প্যাট কামিন্স মিলে ১০টি করে উইকেট দখল করেছেন। লেগ স্পিনর এ্যাডাম জাম্পা ২২ উইকেট নিয়ে তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। 
বিশ^কাপে দুই ইনিংসে দুটি করে বল ব্যবহার করার কারনে রিভার্স সুইং পাচ্ছেন না স্টার্ক। এ কারনেই উইকেট স্বল্পতা দেখা দিয়েছে বলে দাবী তার।  এ সম্পর্কে স্টার্ক বলেন, ‘এখানে অনেক বিষয় জড়িত। দুই ইনিংসে উইকেটের মান একেবারে ভিন্ন হয়ে যায়। দিনের আলোয় এক ধরনের, রাতে সেটা একেবারে পাল্টে যাচ্ছে। তখন বলের গতি একেবারেই থাকে না। কৌশলগত কারনে বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনা সম্ভব হচ্ছেনা। যে কারনে দলের ফলাফলে প্রভাব পড়ছে। আমি নিশ্চিতভাবেই নিজের মান অনুযায়ী বোলিং করতে পারিনি। কিন্তু এখন বড় ম্যাচে নিজেকের প্রমানের সুযোগ রয়েছে।’
কাঁধ ও উরুর ইনজুরির কারনে এ্যাশেজের পর বেশ কিছু সিরিজ মিস করেছেন স্টার্ক। বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে তিনি কেন খেলেননি তার কারন জানাননি, ‘আমি শুধুমাত্র তখনই খেলি যখন শতভাগ ফিট থাকি। আমি সম্ভবত ১০টি ম্যাচ খেলেছি। সব বোলারই কিছু না কিছু সমস্যা ভোগে। ব্যাটারদের মত আমরা সেই বিষয়গুলো সবসময় সামনে আনতে চাইনা।