শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : এশিয়ার দেশে দেশে আজ বৃহস্পতিবার প্রিয়জনদের হারানোর বেদনায় অশ্রুসিক্ত মানুষের প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে ভয়াবহতম প্রকৃতিক দুর্যোগ সুনামির দু’দশক পূর্তির অনুষ্ঠান পালন শুরু হয়েছে। দুই দশক আগে আজকের এই দিনে ভারত মহাসাগরের উপকূলীয় দেশগুলোতে এই সুনামির আঘাতে ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। বান্দা আচেহ থেকে এএফপি জানায়, সেই সব হতভাগাদের স্মরণে এই বর্ষপূর্তি পালিত হচ্ছে।
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর, ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম প্রান্তে ৯.১ মাত্রার এক ভূমিকম্পের আঘাত ভারত মহাসাগরে ধারাবাহিক দৈত্যকার ঢেউয়ের সৃষ্টি করে, যা ইন্দোনেশিয়া থেকে সোমালিয়া পর্যন্ত ১৪টি দেশের সমুদ্র উপকূল ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ’তে এক লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং থাইল্যান্ডসহ এই অঞ্চলের চারপাশের দেশগুলোতে একাধিক স্মরণ অনুষ্ঠান শুরুর অংশ হিসেবে দেশটির বাইতুর রহমান জামে মসজিদ থেকে সাইরেন বাজানো হয়। সুনামি ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানার কয়েক ঘন্টার মধ্যে শ্রীলংকা, ভারত, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, মিয়ানমার প্রত্যক্ষ করে ধ্বংসযজ্ঞ।
৫৪ বছর বয়সি ইন্দোনেশিয়ার স্কুল শিক্ষক হাসনাবতি বলেন, দিনটিকে তার কেয়ামতের মত মনে হয়েছিল। রোববারের সকালে পরিবারের সবাই হাসাহাসি করছিল। হঠাৎ করে সুনামি আঘাত হানল। সবকিছু শেষ হয়ে গেল। যার অনুভূতি আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
আচেহ’র উলি লেইউ গণকবরের পাশে বসে কিছু ইন্দোনেশিয়ান বিলাপ করছে। যেখানে ১৪ হাজার মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছে। আচেহ প্রদেশজুড়ে অনেকগুলো গ্রাম নিজস্ব রীতিতে নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা করছে। যে সব গ্রামে সুনামির আঘাতে পুরো জনগোষ্ঠি শেষ হয়ে গেছে। এই সুনামির আঘাতে ইন্দোনেশিয়াতে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
থাইল্যান্ডে, সুনামির আঘাতে ৫ হাজার মানুষ মারা যায় যাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিল পর্যটক। সেখানে বান নাম খিম গ্রামে স্মরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বিলাপকারীরা সেখানে সুনামি ঢেউ আকারের একটি খোদাইকৃত দেওয়ালে ফুল দিচ্ছে, ফুলের মালা রাখছে।
৫৫ বয়সি নাপাপোর্ন যিনি তার বোন এবং বোনের মেয়েকে হারিয়েছেন এএফপিকে বলেছেন, আমি শূন্যতা অনুভব করছি। প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠানে আমি এখানে আসি।
সুনামি শ্রীলংকাতে সুনামি ৩৫ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। এদের মধ্যে একটা দৈত্যকার ঢেউয়ের আঘাতে কলম্বো থেকে ৯০ কিমি দক্ষিণে একটি ট্রেনকে লাইনচ্যূত হলে ১ হাজার যাত্রী নিহত হয়। তাদের স্মরণেও শ্রীলংকাতে অনুষ্ঠান হবে।