বাসস
  ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:১১

ইউক্রেনে ট্যাংক সরবরাহের প্রতিশ্রুতির পর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ নিহত

কিয়েভ, ইউক্রেন, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস ডেস্ক): জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের জন্য ভারী ট্যাঙ্ক সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার একদিন পর বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে রুশ হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছে।
ধাপে ধাপে সামরিক সহায়তা মিত্রদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ভুল ধারণাকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের জন্য পশ্চিমা সমর্থন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
রাশিয়া পশ্চিমাদের ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্তকে তাদের ‘সরাসরি সংঘাতে জড়িত’ হওয়া মনে করে ঘোষণার পর সর্বশেষ এই হামলা চালানো হয়। 
অনেক ইউক্রেনীয় মিত্রদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। একজন ইউক্রেনীয় ডাক্তার যিনি তার নামের প্রথম অংশ লিজা উল্লেখ করে বাখমুতের ফ্রন্টলাইন শহরের কাছে এএফপি’কে বলেছেন,  ‘ট্যাঙ্ক পাঠানো তাড়াতাড়ি এবং সংখ্যায় বেশী হওয়া উচিত ছিল’।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে, রাশিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১১ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে। 
আগের দিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে গুলি করে ধ্বংস করা রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরোর আঘাতে কিয়েভে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী রাশিয়ার ছোঁড়া ৫৫টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৪৭টি ধ্বংস করেছে।
অক্টোবর থেকে, রাশিয়া ইউক্রেন জুড়ে বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ওপর নিয়মিত হামলা শুরু করেছে, যেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো ‘ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করার’ জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ডিটিইকে জানিয়েছে, কিয়েভের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিকালের মধ্যে স্থিতিশীল হয়, কিন্তু কৃষ্ণ সাগরের ওডেসার দক্ষিণাঞ্চলে ‘জরুরি বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত থাকবে’।
হামলার কারণে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কলোনার সফর বিলম্বিত হয়েছে। যিনি ইউক্রেনের শীর্ষ কূটনীতিক দিমিত্রো কুলেবার সাথে সাহায্যের বিষয়ে আলোচনা করতে ওডেসায় এসেছিলেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ১৪টি লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক পাঠানোর সম্মতি দেয়ায় পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুধবার বলেছে, তারা ইউক্রেনে ৩১টি আব্রামস ট্যাঙ্ক সরবরাহ করবে। এই সিদ্ধান্ত অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব সংগ্রহে থাকা লেপার্ড সরবরাহের পথ খুলে দিয়েছে। 
ব্রিটেনের সরকার বলেছে, তারা মার্চের শেষে ট্যাঙ্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সপ্তাহে তারা প্রশিক্ষণ শুরু করবে।
যদিও পশ্চিমা দেশগুলো ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে আর্টিলারি থেকে প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি-মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পর্যন্ত সমস্ত কিছু পাঠিয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিতে তারা ট্যাঙ্ক পাঠানোকে অনেক দূরের একটি পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করেছিল। 
কিন্তু ইউক্রেন পূর্ব ও দক্ষিণে ক্রমবর্ধমান আটকে পড়া রাশিয়ানদের পিছনে ঠেলে পাল্টা আক্রমণের জন্য কিয়েভ প্রস্তুতি নিচ্ছে, মিত্ররা এখন প্রতিক্রিয়া জানাতে সাড়া দিচ্ছে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বৃহস্পতিবার বলেছেন, বার্লিনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া লেপার্ড ট্যাঙ্কগুলো ‘মার্চের শেষের দিকে অথবা এপ্রিলের শুরুতে’ পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, জার্মানি লেপার্ড ট্যাঙ্কের যুদ্ধ বিষয়ে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রশিক্ষণ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শুরু করবে।