বাসস
  ১৭ আগস্ট ২০২৩, ২০:৩৭

নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার

ঢাকা, ১৭ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): মুক্তিযুদ্ধের পর নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল শুক্রবার। দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পরীতির এই প্রবর্তক জন্মেছিলেন ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। ১৯৭৪ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ওই বছরই বেগমজাদী মেহেরুন্নেসার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। মধ্যযুগের বাংলা নাট্যরীতি নিয়ে গবেষণা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলা নাট্যকোষেরও প্রণেতা তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা সেলিম আল দীনের হাত ধরেই। তিনি ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৮১-৮২ সালে নাসিরউদ্দীন ইউসুফকে সাথি করে গড়ে তোলেন গ্রাম থিয়েটার।
ডক্টর সেলিম আল দীনের জন্মবার্ষিকী পালনে বিভিন্ন সংগঠন ও তার পরিবার নানা কর্মসূচির গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- নাট্যাচার্যের স্মরণে প্রবর্তিত বিশেষ পদক দেবে ঢাকা থিয়েটার। ২০২১ সালের পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় আর ২০২৩ সালের পদক দেয়া হবে নির্দেশক সৈয়দ জামিল আহমেদ। শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ৪০ বছর পূর্তি সমাপনী উৎসব ও সেলিম আল দীনের জয়ন্তী। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে শুক্রবার ও শনিবার দুই দিনব্যাপী সেলিম আল দীনকে স্মরণ করবে স্বপ্নদল। স্মরণ-শোভাযাত্রা, সমাধিতে পুষ্প অর্পণ, নাট্যাচার্যের প্রতিকৃতিসহকারে শিল্পকলা চত্বর সজ্জা, নাট্যাচার্যকে নিয়ে আলোচনা ছাড়াও দু’টি নাটক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তারা।
সেলিম আল দীনের ভাগ্নে ও নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন চর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক রাজিব সরওয়ার বাসসকে জানান- নাট্যাচার্যের জন্ম শহর ফেনীতে শুক্রবার বিকেলে আর্য্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আর তার গ্রামের বাড়ির সেনেখিলের মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও, শোকাবহ আগস্টের কারণে সেনেরখিলের সেলিম আল দীন উৎসব করা হবে সেপ্টেম্বর মাসে। 
সেলিম আল দীনের উল্লেখযোগ্য নাটকসমূহ: জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন' (১৯৭৫), 'বাসন' (১৯৮৫), 'মুনতাসির', 'শকুন্তলা', 'কীত্তনখোলা' (১৯৮৬), 'কেরামতমঙ্গল' (১৯৮৮), 'যৈবতী কন্যার মন' (১৯৯৩), 'চাকা' (১৯৯১), 'হরগজ' (১৯৯২), 'প্রাচ্য' (২০০০), 'হাতহদাই' (১৯৯৭), 'নিমজ্জন' (২০০২), 'ধাবমান', 'স্বর্ণবোয়াল' (২০০৭), 'পুত্র', ও ‘বনপাংশুল’।
তিনি ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের কাছে তাকে সমাহিত করা হয়।