শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৬ মার্চ, ২০২৪ (বাসস) : চট্টগ্রামে এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামের আগুন তিন দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত সোমবার বিকেল ৩ টা ৫৫ মিনিটে লাগা আগুন ৮ ঘণ্টা পর অর্থাৎ ওই রাত ১১ টার পরে নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক কর্মী আগুন নেভাতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সেনা, নৌ, ও বিমানবাহিনী, এবং কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, অর্থাৎ এই আগুন আর কোথাও ছড়াতে পারবে না। তবে ভেতরে ১২০০ থেকে ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আগুন জ্বলছে। এতো তাপমাত্রার মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢুকতে পারছেন না। চিনির কাঁচামালগুলো কার্বন, হাইড্রোজেন অক্সিজেনসহ দাহ্য পদার্থে মিশ্রিত হওয়ায় সেগুলো পুড়ে শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন নেভানো সম্ভব হবে না। আমরা প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে আগুনকে নিয়ন্ত্রণে রাখছি। মনে হচ্ছে পুরোপরি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই-তিন দিন সময় লাগতে পারে।
তবে অগ্নিকা-ে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলছেন, গুদামে শুধু অপরিশোধিত চিনিই ছিল। কোনো শ্রমিক সেখানে কর্মরত ছিলনা। ফলে সেখানে কোনো প্রাণহানির আশঙ্কা নেই।
এদিকে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল আলম মাসুদ বাসস’কে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে বাজারে সরবরাহ করার জন্য পর্যাপ্ত চিনি রয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে বাজারে আমরা চিনি দিতে পারবো। আশা করি তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকায় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আগুন লাগা কারখানা পরিদর্শন করতে এসে সাংবাদিকদের এই আশার কথা শুনিয়েছেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার।
সাইফুল আলম আরো বলেন, ‘আমাদের গুদামের অগ্নিকা-কে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু বাজারে যাতে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ প্রয়াস থাকবে। আমাদের চিনি মজুত আছে। তা দিয়ে কমপক্ষে এক সপ্তাহ চলবে। প্রোডাকশনে যেতে লাগবে দুই দিন। এরপর আর সমস্যা হবে না। এখন আগুনটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
আসন্ন রমজানে চিনির সরবরাহে আগুনের প্রভাব পড়বে কি-না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তেমন হলে আমি পাশ্ববর্তী দেশ থেকে চিনি নিয়ে আসতাম, আমদানি করতাম। এই রকম কোন সমস্যা হয় কি-না আমি তা দেখে গেলাম।’
এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের গুদামে এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। তারা বলছেন, আগুনে আমাদের কোম্পানির এক হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী সায়ফুল আলম গুদামে আগুনের নেতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়বে না মর্মে আশ^স্ত করেছেন।
চিনির গুদামে আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুন না নিভলেও কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করে দিয়েছে তদন্ত কমিটি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানের নেতৃত্বাধীন কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।