বাসস
  ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫৬

ঈদের পর পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান : মেয়র তাপস

ঢাকা, ২ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস) : আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের পর পুরান ঢাকার অবৈধ রাসায়নিক গুদামের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকা আমরা আর ঝুঁকিপূর্ণ রাখতে পারি না। কিছুদিন আগে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে এবং এটা প্রতিনিয়ত ঘটছে। ইতোমধ্যে রাসায়নিক দ্রব্যাদি স্থানান্তরের জন্য যে গুদামঘর, কারখানা প্রয়োজন তা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে শ্যামপুরে শিল্পাঞ্চলে করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত সেখানে মাত্র একজন গিয়েছেন। আমরা তাকে বাণিজ্য অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) দিয়েছি। আরেকজন আবেদন করেছেন। সেটাও আমরা করে দিচ্ছি। এই সভার মাধ্যমে পুরান ঢাকায় যারা রাসায়নিক ব্যবসা করছেন তাদের প্রতি আমার নিবেদন এবং কঠোর হুঁশিয়ারি থাকবে। আপনারা আইন অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে সেখানে স্থানান্তরিত হোন। না হলে ঈদের পর আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করবো।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর উদ্যোগে মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘পুরোনো ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে যানজটের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় চিহ্নিতকরণ’ শীর্ষক স্টেকহোল্ডার মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এসব কথা বলেন। 
রাসায়নিক দ্রব্যাদির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এমন ভবনগুলো প্রয়োজনে সিলগালা করে দেয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের  তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৯২৪টি রাসায়নিক দ্রবাদির গুদাম ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সেখানে রয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে সেসব প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন বন্ধ রেখেছি। তারপরও আপনারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে সেখানে ব্যবসা করছেন। আমরা ঈদের পরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে সবগুলো বন্ধ করে দেব। আরেকটি বিষয় হলো, সেসব ভবনে উপরে কিন্তু অনেকেই আবাসন হিসেবে ব্যবহার করেন আবার নিচে গুদামঘর। এটি অত্যন্ত বিপদজনক। তাই প্রয়োজনে সেসব ভবন সিলগালা করে বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ করে দেব। এতে পুরো ভবন বন্ধ হয়ে যাবে। তখন যে ভোগান্তি হবে সেজন্য আপনারা আমাদেরকে দোষারোপ করতে পারবেন না।’ 
ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিটিসিআই’র নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক মো. আব্দুল বাকী মিয়াসহ পুরান ঢাকা কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, বাংলাদেশের জিডিপিতে ঢাকার অবদান ৪৬ শতাংশ আর ঢাকা কেন্দ্রিক যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে তারমধ্যে পুরোনো ঢাকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান প্রায় ৪০ শতাংশ। সুতরাং পুরনো ঢাকার যানজট কমাতে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং বিদ্যমান সমস্যাসমূহের আশু সমাধান অত্যন্ত জরুরি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।