শিরোনাম
সংসদ ভবন, ৭ মে, ২০২৪ (বাসস) : অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, অর্থবছরের শেষে মূল্যস্ফীতি সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে।
রোববার জাতীয় সংসদে ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন’ উপস্থাপনকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সরকারের ব্যয়ে কৃচ্ছতাসাধনসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বছর শেষে মূল্যস্ফীতি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকবে।’
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের নির্ধারিত অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার গত বছর থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দেখা যায়, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতির চাপ প্রকট হয়েছে।
ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন,বিগত কয়েক বছর ধরে করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য ভূরাজনৈতিক কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব চলছে, তা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। কিন্তু সব বৈরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
মূল্যস্ফীতির মত বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ শক্ত অবস্থানে ফিরে আসা, রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যও অর্জন সম্ভব হবে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খুব দ্রুত শক্ত অবস্থানে ফিরে আসবে।
প্রতিবেদনে তিনি বলেন, আগামী জুলাই থেকে কাস্টমস আইন ২০২৩ বাস্তবায়ন শুরু হবে। এছাড়া ১০ লাখ বা এর বেশি টাকার মূল্য সংযোজন কর (মূসক) পরিশোধে ই-পেমেন্ট বা ই চালান ব্যবহার বাধ্যতামুলক করা হবে।
এছাড়া উৎসে কর কর্তনের জন্য ‘ইলেকট্রনিক ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স (ইটিডিএস)’ ব্যবস্থা করা করা হবে। এছাড়া ‘ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি)’ এবং সেলস ডাটা কন্ট্রোলার (এসডিসি) মেশিন বসানোর কার্যক্রম চলছে। থার্ড পার্টির মাধ্যমে এ কাজ দ্রুত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
নতুন করদাতা শনাক্তকরণ, মিডিয়াম অ্যান্ড লং টার্ম রেভিনিউ স্ট্রাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদকে জানানো হয়েছে। এতে অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়বে বলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী মনে করেন।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে কর রাজস্ব ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি ব্যয় হয়েছে ১৯৪৮৯৮ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫.৬২ শতাংশ বেশি। প্রথম ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মোট বরাদ্দের ২৩.৩ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১.৫ শতাংশ বেশি। ডিসেম্বর শেষে রপ্তানি আয় দাড়িয়েছে ২৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৮৪ শতাংশ বেশি।
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি ব্যয় ১৯.৮০ শতাংশ কমেছে। বিলাসদ্রব্যের আমদানি পরিশোধ করা এবং মিতব্যয়িতার কারণে আমদানি কমেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১০.৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২.৯১ শতাংশ বেশি।