বাসস
  ০৭ মে ২০২৪, ১৭:২৪

রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন: শেখ হাসিনা

ঢাকা, ৭ মে, ২০২৪ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। তাঁকে (রবীন্দ্রনাথ) জীবনমুখী শিক্ষা দর্শনের পথপ্রদর্শকও বলা যায়।
আগামীকাল বুধবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তাঁর হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। 
শেখ হাসিনা বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। তিনি প্রকৃতিলগ্ন ও জীবনমুখী শিক্ষা দর্শনের পথপ্রদর্শকও। ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে’। প্রধানমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তাঁর গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তাঁর গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র । 
শেখ হাসিনা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের একান্ত আপনজন। জীবনের যেকোনো সমস্যা-সংকটে তাঁর সৃষ্টি উত্তরণের অনিবার্য উপায়। আজ বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ-সংঘাত, হিংসা-হানাহানি আর সাম্প্রদায়িকতার নগ্ন উল্লম্ফন তা নিরসনে রবীন্দ্রনাথ হতে পারেন প্রধান নিয়ামক শক্তি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের সময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর গান ও রচনাসমূহে সোনার বাংলার কথা উল্লেখ করেন। পরবর্তীকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই চেতনাকে ধারণ করে সোনার বাংলা স্বাধীন করার প্রত্যয় গ্রহণ করেন এবং ‘আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দেন’। পুরো পাকিস্তান আমলে, এমনকি পরবর্তী সময়েও দেশ গড়ার চিন্তা-চেতনায় রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চেতনা প্রবাহের অপরিহার্য অংশ।
প্রধানমন্ত্রী এই মহান কবির জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।