বাসস
  ২৫ জুন ২০২৪, ২২:১৯
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৪, ২২:৪৬

প্রস্তাবিত বাজেট অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে

সংসদ ভবন, ২৫ জুন, ২০২৪ (বাসস) : আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া ও হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে।
জাতীয় সংসদে আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া ও হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে প্রস্তাবিত বাজেট সহায়তা করবে।
সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সংঘাতের কারণে পুরো বিশ্ব এখন মারাত্মক অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট সময় উপযোগী এবং বিরাজমান অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে এবং প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জীবিকা নির্বাহ ব্যয় ৫০ শতাংশ থেকে শতভাগে উন্নীত হয়েছে।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ভারত বাংলাদেশের দুর্দিনের বন্ধু, যা রক্তের অক্ষরে লেখা। যুদ্ধের পরে মিত্রবাহিনী এত তাড়াতাড়ি দেশ ছেড়ে চলে যায় এমন ইতিহাস পৃথিবীর কোথাও নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গঙ্গার পানি চুক্তি করেছেন। এবার তিস্তার পানির সমাধানে বিস্তারিত আলাপ করেছেন। ইনশাআল¬াহ আলোচনার মাধ্যমে তিস্তার পানির সমাধানও করবেন। স্বাধীনতার পর থেকে যারা ভারত বিরোধীতা করে আসছে, তারা দেশের শত্রু, জনগণের শত্রু, পাকিস্তানের এজেন্ট। তাদের উচিত এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া।
প্রস্তাবিত বাজেটকে দূরদর্শী ও বাস্তবসম্মত আখ্যা দিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের আকার গত বছরের বাজেটের তুলনায় মাত্র ৪.৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে যা প্রমাণ করে সরকার বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনায় বাজেট প্রণয়নে সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, চাকুরীতে নিয়োগের সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মীদের হলফনামা দিতে হবে,  কিন্তু তারা হলফনামা দেন না। তিনি প্রতি ৫ বছর অন্তর বা পদোন্নতির সময় হলফনামা দেবার দাবি জানান। এ নিয়ম চালু করলে তাদের কি পরিমান আয় বা সম্পদ বাড়ছে তা জানা যাবে, দুর্নীতি কমবে।
প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট জনমুখী হওয়ায় সরকার ত্রিশটি জিনিসের ওপর কর কমিয়েছে যা মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে।
অপর স্বতন্ত্র সদস্য মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শীর্ষক দেশের ৫৩তম প্রস্তাবিত বাজেট, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় মাত্র ৪.৬ শতাংশ বড়, এটি একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে।’
পিতার সম্পত্তিতে কন্যাসন্তানদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে আন্তরিক হওয়ার আহবান জানিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির সদস্য কানন আরা বেগম বলেন, সম্পত্তিতে কন্যাসন্তানদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা গেলে সমাজে তাদের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বার্থে তিনি মোবাইল ও ইন্টারনেট বিলের উপর প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেয়ায়, এই অর্থ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করলে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে, ব্যাংকের তারল্য সংকট কমে আসবে।    
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে চ্যালেঞ্জিং হবে।
আলোচনায় আরও অংশ নেন মাহফুজুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, শেখ আনারকলি পুতুল, মতিয়ার রহমান, মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু, জ্বরতি তঞ্চঙ্গ্যা, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, নাজমা আক্তার, মোতাহার হোসেন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ইমরান আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন, আহমদ হোসেন, অপরাজিতা হক, আ ক ম বাহাউদ্দিন, সেলিম মাহমুদ, সাহাদারা মান্নান, জান্নাত আরা হেনরী, শামীমা হারুন, জাতীয় পার্টির সদস্য আশরাফুজ্জামান এবং স্বতন্ত্র সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, আব্দুল মোতালেব, শামিম শাহরিয়ার, আবদুর রশিদ ও আব্দুল মালেক সরকার।