বাসস
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:০৪
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:২৪

বন্যা দুর্গত জেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক: আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ

ঢাকা, ২ সেপ্টম্বর, ২০২৪ (বাসস) : সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরছেন। দুর্গত জেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে বলেও জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
আজ সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেশে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির নিয়ে গণ্যমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে এ সকল তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। এছাড়া, দেশে সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।
দেশে বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহ হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার।
এরমধ্যে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে এবং ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার জন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোক সংখ্যা ৫১ লাখ ৮ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে মারা গেছে মোট ৬৭জন। যারমধ্যে পুরুষ ৪২, মহিলা ৭ ও শিশু ১৮ জন। জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যা কুমিল্লায় ১৭, ফেনীতে ২৬, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়ি এক, নোয়াখালীতে ১১, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় এক, লক্ষ্মীপুরে এক, মৌলভীবাজার এক ও কক্সবাজারে ৩ জন। এছাড়া, মৌলভীবাজারে এক জন নিখোঁজ রয়েছেন। বর্তমানে মোট ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭ টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের  আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ৬১৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে  মোট ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৪১ জন লোক এবং ৩২ হাজার ৮৩০ টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এছাড়া, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৪৭২ টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে।
সশস্ত্রবাহিনী বন্যা দুর্গত এলাকায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার ১৪০ প্যাকেট ত্রাণ, ২২ হাজার ১০ প্যাকেট রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে। বন্যা দুর্গত এলাকা থেকে মোট ৪২ হাজার ৯১৪ জনকে উদ্ধার এবং ৪২ হাজার ১১৩ জনকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ১৫৩ জনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। সশস্ত্রবাহিনী পরিচালিত মোট ২৪টি ক্যাম্প এবং ১৮টি মেডিকেল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের  কর্তৃক সংগৃহীত  মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, কাপড় ও পানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিডিএম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এতে তথ্য ও সহযোগিতার জন্য টেলিফোন ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। এছাড়া, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থসহায়তা প্রদানের জন্য আগ্রহী ব্যক্তিগণ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল, সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, হিসাব নম্বর-০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩ এ প্রেরণ পাঠাতে  পারবেন।