বাসস
  ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:০২

ইন্দো-প্যাসিফিকে সামুদ্রিক করিডোরে স্থিতিশীলতা জোরদারের আহ্বান

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য ইন্দো-প্যাসিফিকে সামুদ্রিক করিডোরগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে বঙ্গোপসাগর বিষয়ক সংলাপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা জোরদার করার লক্ষ্যে আসিয়ানের সামুদ্রিক নিরাপত্তা উদ্যোগ এবং কোয়াডের নৌ চলাচল সহযোগিতা সহ সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

ইন্দো-প্যাসিফিকের সামুদ্রিক করিডোরগুলি ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, আঞ্চলিক ভূখন্ডগত বিরোধ, জলদস্যুতা ও পরিবেশগত হুমকির বিষয়গুলো উল্লেখ করে সংলাপে অংশগ্রহনকারী বক্তারা ‘উত্তাল জলসীমা : বিভক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় জাহাজ চলাচল’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে আলোচনাকালে এ আহ্বান জানিয়েছেন। তারা দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা এবং বঙ্গোপসাগরে অবৈধ মাছ ধরার মতো নিরাপত্তার বিষয়গুলোও তুলে ধরেন।

গত ১৬ নভেম্বর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু তিন দিনব্যাপী  বঙ্গোপসাগর সংলাপের অংশ হিসেবে আজ দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বে অব বেঙ্গল সংলাপ-২০২৪-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বেসরকারি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।

আজকের অধিবেশনে বেশ কয়েকটি সিম্পোজিয়াম, পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন এবং সংলাপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবার বঙ্গোপসাগর সংলাপে সমসাময়িক বিষয়গুলোর মধ্যে পাঁচটি মূল বিষয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ভুল তথ্যের ক্রমবর্ধমান বিস্তার, সবুজ শক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সমস্যা, বৈশ্বিক দ্বন্দ্বের পটভূমি ও ভূরাজনীতি এবং মানবাধিকার বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ৭৭টি সেশনে ২০০ বক্তা, ৩০০ প্রতিনিধি এবং ৮০০ অতিথি যোগ দিয়েছেন। 

আজ ‘মানি ট্রেইল অ্যান্ড ব্রোকেন প্রমিসেস : ফাইটিং করাপশন ইন পাবলিক সার্ভিস’; ‘চোকিং অন প্রোগ্রেস: এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড ফসিল ফুয়েল, ডিলেমাজ ইন এ গ্রোয়িং ইন্দো-প্যাসিফিক’ এবং ‘সাপ্লাই চেইন ডিজরাপশানস: নেভিগেটিং ইকোনমিক রিকভারি ইন এ ফ্র্যাজাইল ওয়াল্ড’ শিরোনামের তিনটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্লাব ডি মাদ্রিদের সদস্য মুসা মারা আজ সম্মেলনে বিশেষ ভাষণ দেন। 

‘পাওয়ার শিফটস : দ্য জিওপলিটিক্যাল চেসবোর্ড ইন এ ফ্র্যাগমেন্টেড ওয়াল্ড’ শীর্ষক আরেকটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অধিবেশনে বক্তারা বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াইয়ের কেন্দ্রে রয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শঙ্কা জাগিয়েছে। তারা বলেন, ভারত এ অঞ্চলে তার ক্রমবর্ধমান প্রভাবের সাথে সাথে চীনের আধিপত্যের বিষয়ে ভারসাম্য আনতে চাইছে। তারা আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে চতুর্পক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপ (কোয়াড) চীনের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রতিক্রিয়া। বক্তারা ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিবর্তনশীল শক্তির ভারসাম্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে চীনের উত্থানে অন্যান্য দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, কূটনীতি ও বৈশ্বিক শাসনের জন্য এর অর্থ কী, তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন।

আজকের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে, ‘ব্রেকিং দ্য নিউজ : ফ্রিডম অব দ্য প্রেস বনাম সশস্ত্র তথ্য’ এবং ‘পপুলিজমের যুগে প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ, গণতান্ত্রিক স্থিতিস্থাপকতা এবং অখণ্ডতার জন্য কৌশল’ বিষয়ক দুটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। পরে, ‘বিয়ন্ড দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড : চীনের কৌশলগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ব্রিকসের ভবিষ্যত’, 'উদীয়মান হুমকি : হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার অ্যান্ড দ্য ফিউচার অব গ্লোবাল সিকিউরিটি’ এবং ‘দ্য নিউ গ্লোবাল মার্কেটপ্লেস : অর্থনৈতিক শক্তি, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সহযোগিতা’ শীর্ষক তিনটি সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।