শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন, ‘আমরা স্বাধীনতার জন্য ৭১ ও ২৪-এ দুইবার লড়াই করেছি। একাত্তর যেভাবে আমাদের ইতিহাসে স্থাপিত হয়েছে, সেভাবে চব্বিশের নিজস্ব ইতিহাস ধরে রাখার জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সফলকারীরা তারুণ্যের শক্তি। এই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস খেয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আধিপত্যের বিরুদ্ধে গিয়ে ২৪-এর ইতিহাসকে আমাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। তখনই ২৪-এর ইতিহাসকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।’
আজ বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা মিলনায়তনে সমগীতের গানেপ্রাণে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘একাত্তর থেকে চব্বিশ: সাংস্কৃতিক রূপান্তরের বয়ান’।
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে ভিন্ন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ৭১ নিয়ে হাজার হাজার গল্প, উপন্যাস, কবিতা, সিনেমা, গান লেখা হয়েছে। কিন্তু ২৪ নিয়ে কয়টা সাহিত্য তৈরি হয়েছে? ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সংস্কৃতিতে কতটা গ্রহণ করেছি? আমাদের ভেতর এক জুজুর ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে ২৪ দিয়ে ৭১ ঢেকে ফেলা হচ্ছে। এটা নতুন একটা ন্যারেটিভ তৈরি হবে। ২৪-এর আন্দোলন একদিনে হয়নি। এর আগে ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন, কোটা বিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যোগফল এই আন্দোলন।’
মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘২০১৮ সালে যারা স্কুলে পড়তো তারাই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। তারা তখনই বলেছিল রাষ্ট্র সংস্কার কাজ চলছে। আর ২৪-এ এসে তারা রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম অংশ হিসেবে হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছে। বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল চেষ্টা করেছে হাসিনাকে উৎখাত করতে। কিন্তু পারেনি। প্রায় কয়েকটি বৈদেশিক পরাশক্তির সমর্থনের মাধ্যমে এখানে চিরস্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার পরিস্থিতি শুরু করেছিল। আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। অনেকেই বাধ্য হয়েছিল আপোস করে নিতে। ২০১৮-তে যে শিক্ষার্থীরা বলেছিল নতুন রাষ্ট্র লাগবে, তারাই এবার শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে ছেড়েছে।’
মাহবুব বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের ছোট করে রাখতো এই বলে যে যারা আমার শাসনের বিরোধিতা করবে তারা দেশপ্রেমিক না। তারা একাত্তরের বিরোধী। কালচারাল দমনের মধ্যে আমাদের বিকাশ হয়েছে। ভারত বা কোলকাতা যেটা গ্রহণ করবে যেমন ৭১, যেমন ৫২, প্রগতিশীল সাহিত্য। অর্থ্যাৎ তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল হবে এমন সাহিত্য, ইতিহাসকে তারা গ্রহণ করবে এবং সেটাকেই বড় করে তুলবে। তখন যতোই রক্ত দেন কিংবা জীবন দেন না কেন, সেই ইতিহাসের চেয়ে বড় করে তুলতে পারবে না।’
নারায়ণগঞ্জ সমগীতের কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান দিনা তাজরিনের সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, চলচ্চিত্রকার হাসান জাফরুল বিপুল, সমগীতের শিল্পী সংগঠক অমল আকাশ, কবি ও পরিবেশ কর্মী আরিফ বাবলু এবং ছড়াকার আহমেদ বাবলু।