বাসস
  ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:৩৫

মানবপাচারকারী চক্রের ৬ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার 

প্রতীকী ছবি।

ঢাকা, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে  মানবপাচারকারী চক্রের ৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো- গ্রেফতার (৩৫), ফয়সাল (৩০), বৃষ্টি (২২), দিলারা বেগম (৫০), মো. সোহাগ হোসেন (৩৪) ও  মো. রিপন ওরফে আপন (৩২)।

কামরাঙ্গীরচর থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী বেবি আক্তার (২৬) তার স্বামী রবিউল কাজীর সাথে প্রায় একবছর ধরে কামরাঙ্গীরচর এলাকার ঝাউচরে ভাড়া বাসায় থাকেন। তার স্বামী রবিউল পেশায় একজন জুতার কারিগর। পাশাপাশি বসবাসের সুবাধে বেবি আক্তারের সাথে পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার সাথে জড়িত সোহাগের পরিচয় হয়। সোহাগের মাধ্যমে বেবির পরিচয় হয় বিভিন্ন ইভেন্ট প্রোগ্রাম এ ড্যান্সার হিসেবে কাজ করা দম্পতি মামুন ও বৃষ্টির সাথে এবং পরবর্তীতে তাদের মাধ্যমে পরিচয় হয় আরেক ড্যান্সার আপনের সাথে। কাজ করার সুবিধার্থে এরা সবাই পাশাপাশি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।

ভিকটিম বেবি আক্তার টিকটকে ভিডিও বানাতো এবং নিজেই উপার্জন করার জন্য কাজ খুঁজতো। মামুনের স্ত্রী বৃষ্টি ও তার শাশুড়ি দিলারা বেগম প্রায় সময়ই ভিকটিম বেবি আক্তারকে বিদেশে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখাতো। তারা বেবি আক্তারকে ভারতের মুম্বাইতে পার্লারে কাজের জন্য প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখায় এবং তার স্বামীর অগোচরে বাসা থেকে পালিয়ে যেতে পরামর্শ দেয়। সরল বিশ্বাসে বেবি আক্তার তাদের কথা মতো কাউকে না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এ কাজে তাকে সহায়তা করে মামুন, তার স্ত্রী বৃষ্টি, শাশুড়ি দিলারা বেগম এবং পাশের ভাড়াটিয়া সোহাগ ও আপন। মামুন মানবপাচারকারী চক্রের মূল হোতা ফয়সালের যোগসাজশে বেবি আক্তারকে ভারতে পাচারের জন্য গত ২০ ডিসেম্বর শ্যামলী কাউন্টার থেকে এসপি গোল্ডেন পরিবহনে করে সাতক্ষীরা পাঠায়। 

বেবি আক্তার সাতক্ষীরায় পৌঁছালে পাচারকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা তাকে নিয়ে যায়। এরপর ওইদিন রাত আনুমানিক ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে বেবি আক্তারকে নৌকা যোগে ইন্ডিয়ায় পাচার করে দেয় চক্রটি। সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানা পুলিশ বেবি আক্তারসহ কয়েকজনকে মুম্বাই যাওয়ার সময় আটক করে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বেবি আক্তার তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে এবং তার ভারতে পাচার হওয়ার বিষয়টি জানায়। এ ঘটনায় গত ২৪ ডিসেম্বর ভিকটিমের বোন চম্পা বেগম বাদি হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় মানব পাচার (প্রতিরোধ ও দমন) আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মানব পাচারের সাথে জড়িত চক্রের অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।