শিরোনাম
ঢাকা, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ভৈরবের আওয়ামী লীগ নেতা পৌর কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন মিন্টু ও তার দুই ছেলেসহ চারজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
ভিকটিম রাজু আহমেদ বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর আজ এই অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে মোশারফ হোসেন মিন্টু, তার ছেলে মো. নাঈম ও মো. আবিদ ছাড়াও মো. রাকিব হোসেন বিল্লালকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগটি কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার ভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন মিন্টু ও তার পুত্র মো. নাঈম ও মো. আবিদ এবং তার ম্যানেজার মো. রাকিব হোসেন বিল্লালসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের সদস্যদের নিয়ে সন্ত্রাসী গ্যাং পরিচালনা করেন। ভৈরবে তাদের পরিচালিত জান্নাত হোটেল এন্ড রিসোর্ট সংলগ্ন পাম্পের দোতলায় টর্চার সেলে অনেকবার ভিকটিম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অভিযুক্ত আসামিরা স্থানীয়দের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজি, আর্থিক নিপীড়ন পরিচালনা করে আসছিল। কাউন্সিলর মিন্টু ও তার সহযোগীরা জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালায়। মিন্টুর পরিচালিত টর্চার সেলে আটক-নির্যাতন ও মুক্তিপন নেওয়া হতো। তার রোষানলের শিকার হয়েছেন অনেকে। নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে আমাকেসহ অনেকে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জান্নাত হোটেল ও রিসোর্টটিতে উত্তেজিত ও বিক্ষুদ্ধ স্থানীয় হাজার হাজার জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়। কিন্তু মিন্টুরা রয়ে যায় এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও টর্চার সেল বন্ধ রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করছি।
ওই টর্চার সেল থেকে গত ৫ আগস্টের তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে যা তদন্ত করলে সব তথ্য উদঘাটিত হবে বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। তাই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনে আর্জি পেশ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জাজ্বল্যমান এ অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।