বৃষ্টিতে খুশি ফরিদপুরের পাট চাষীরা

বাসস
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৩:২৪
বৃষ্টির কারণে খাল, বিল, ডোবা, নালা ভরে যাওয়ায় জাগ দেওয়ার পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি জেলার পাট চাষীদের। ছবি : বাসস

।। আনিচুর রহমান ।।

ফরিদপুর, ৩১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : এবার জেলায় দুই লক্ষাধিক টন পাট উৎপাদন হওয়ার আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এবার বৃষ্টির কারণে খাল, বিল, ডোবা, নালা ভরে যাওয়ায় জাগ দেওয়ার পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি জেলার পাট চাষীদের।

প্রতি বছর জাগ দেওয়ার পানির সংকটে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় পাটের জন্য বিখ্যাত জেলার চাষীদের। তবে এবার বৃষ্টির কারণে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ মৌসুমে জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৮৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হওয়ায় দুই লক্ষাধিক টন পাট উৎপাদন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। যার বাজার মূল্য দুই হাজার কোটি টাকার বেশি।

জেলা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ফরিদপুরের পাললিক, বেলে দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি পাট চাষের জন্য বেশ উপযোগী। পাশাপাশি পাট চাষের জন্য উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়া প্রয়োজন। জেলায় রয়েছে পদ্মা- আড়িয়াল খাঁ-মধুমতির মতো নদী।

‘ফরিদপুরের জলবায়ু এই বৈশিষ্ট্যগুলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলেই পাট উৎপাদনে এ জেলা দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। সেজন্য এ জেলাকে পাটের রাজধানী বলা হয়।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুরের চরভদ্রাসন ব্যতীত বাকি আটটি উপজেলাতে ব্যাপক হারে পাট চাষ করা হয়। জেলায় পাটের মোট আবাদি জমির ৭৫ শতাংশ বেশি। আর এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট আছেন প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক কৃষক-কৃষানি।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্রই এখন যেন পাটের কাজে ব্যস্ত চাষীরা। কেউ ক্ষেত থেকে পাট কাটছেন, কেউ আঁটি বেঁধে মাথায় করে জাগ দেয়ার জন্য পানির কাছে নিচ্ছেন। আবার কেউ পাট পানিতে জাগ দিচ্ছেন।

আবার কেউ জাগ দেওয়া পাট তুলে আঁশ ছাড়িয়ে ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে শুকানোর কাজ করছে। এমন চিত্রের দেখা মেলে জেলার সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারিসহ প্রায় সব কয়টি উপজেলাতে।

কথা হয় নগরকান্দা রসুলপুর দেলোয়ার শিকদার সহ বেশ কয়েক জন চাষীর সঙ্গে।তারা জানান, এবার তুলনামূলক পাটের ফলন ভালো। গত কয়েক বছরে তুলনায় এবার পাট কাটার সময় ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে জাগ দেওয়ার পানি নিয়ে চিন্তা নেই। এলাকায় কুমার নদ থাকলে ও ফসলি জমি থেকে নদী বেশ দূরে। নদীতে পাট জাগ দিতে হলে খরচ অনেকটা বেশি পড়ে।তবে অন্যান্য বছরের মত পাট জাগ দিতে এবার যেতে হচ্ছে না নদীতে।অতি বৃষ্টি হওয়ার কারণে জাগ দেওয়ার পানি নিয়ে চিন্তা নেই, আশা করি ভালো রংও আসবে পাটে।

তবে পাট আবাদে চাষীদের ব্যয়ও বেড়েছে অনেক, বপনের শুরুর দিকেই বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চাষীদের সেচ নির্ভর হতে হয়েছে। এখানে গুণতে হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ।

তাই ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে তারা বলেন, এ মৌসুমে একমণ পাট বাজারে নেওয়া পর্যন্ত খরচ হচ্ছে  প্রায় চার হাজারের মতো।এই পাট চাষীদের দাবি মণ প্রতি বিক্রয় মূল্য পাঁচ হাজারের কম হলে গুণতে হবে লোকসান।বাজার দর যেনো ভালো হয় সেই প্রত্যাশা চাষীদের।

চাষীদের এবার পাটের ভালো দাম পাওয়ার আশার কথা জানিয়ে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘পাট পচনের সময় অতিবৃষ্টিপাত হচ্ছে, এ জন্য পাটের কালারটি ভালো হবে। এক্ষেত্রে বাজার দরও সন্তোষজনক হবে বলে মনে করি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
১৯ টি বিষয়ে ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
বদরুদ্দীন উমরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন এনসিপি আহ্বায়ক
জামায়াত আমিরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন এনসিপি আহ্বায়ক
রিয়াদে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন
রাশিয়ায় ‘সরকার পরিবর্তনের’ ডাক জেলেনস্কির
ভারত ও রাশিয়াকে ‘মৃত অর্থনীতি’ আখ্যা দিলেন ট্রাম্প 
কঠিন পরীক্ষার মুখে ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতি 
হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ লেবাননের প্রেসিডেন্ট
সৌদি আরবে বিনোদন পার্কে রাইড ভেঙে আহত ২৩
সেবা দিতে প্রয়োজনে জনসাধারণের কাছে যেতে হবে : জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব
১০