বরিশালে পুলিশের লাঠিচার্জ ও হামলায় আহত হন ৪ সাংবাদিক

বাসস
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৩
বাদ পড়েনি গণমাধ্যম কর্মীরাও। ছবি : বাসস

 শুভব্রত দত্ত 

বরিশাল, ৩১ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : চব্বিশের ৩১ জুলাই ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ ও হামলার হাত থেকে বাদ পড়েনি গণমাধ্যম কর্মীরাও। সেদিন পুলিশের লাঠিচার্জে ছাত্র-জনতার সাথে ৪ জন গণমাধ্যমকর্মী আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বাসসের সাথে আলাপাকালে বলেন, হত্যার বিচার, গণগ্রেপ্তার বন্ধ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মুক্তি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির ডাক দেন শিক্ষার্থীরা। ২৪’র ৩১ জুলাই বুধবার প্রথমে নগরীর সদর রোড অশ্বিনী কুমার হলের সামনে ও পরে  জেলা জজ কোর্ট সংলগ্ন ফজলুল হক এভিনিউ এলাকায় কোন প্রকার উসকানি ছাড়াই পুলিশের এই লাঠিচার্জ ও হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ফটো সংবাদিক শামীম আহমেদ, বেসরকারি টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক হৃদয় শীল, ফটো সাংবাদিক গোবিন্দ সাহা ও একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার প্রতিনিধি তুহিন খান আহত হন। এছাড়াও আহত হন, ছাত্র-জনতাসহ আরও ১৫ জন। 

আহতরা সেদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। একইসাথে এ ঘটনার পর সড়ক থেকে ২ ছাত্রী, ১ জন প্রতিবন্ধী ও পথচারীসহ সর্বমোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। 

সেদিন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কাভার করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জ ও নির্মম হামলার শিকার হন সাংবাদিক শামীম আহমেদ। আঘাতের জের ও উচ্চ-রক্তচাপজনিত কারণে বর্তমানে শয্যাশায়ী ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি স্মরণ করে অশ্রুরুদ্ধ কণ্ঠে শামীম আহমেদ বাসসকে বলেন, পুলিশ যখন আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল। আমি ছবি তুলছিলাম। সেই দায়ে আমাকেও নির্মমভাবে লাঠিপেটা করে। আমি রাস্তায় পড়ে যাই। তবুও তারা মারতে থাকে। এটা কোনোভাবেই পেশাদার আচরণ ছিল না। আহত অবস্থায় তিনি  বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে জানা যায়। তার চোখে-মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। 

৩১ জুলাই বরিশালে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির দিন পুলিশের হামলায় আহত অপর ফটো সাংবাদিক গোবিন্দ সাহা বলেন, আমরা অনেক সাংবাদিক একসঙ্গেই ছিলাম। শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার সময়ে আমাদেরকেও পেটানো শুরু হলো। আমিও আহত হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।

সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর বরিশাল জেলা সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তী এ বিষয়ে বাসসকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছিল। সেদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ এসেই লাঠিচার্জ ও হামলা শুরু করে দেয়। এতে ছাত্র-জনতাসহ একাধিক নারী শিক্ষার্থী আহত হন। পরে আমি জানতে পেরেছি ওই দিন অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সেদিন টেনে-হিঁচড়ে যেভাবে গ্রেপ্তার চালানো হয়েছিল, সেটাও ছিল ন্যক্কারজনক। 


 

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি উপলক্ষে কুমিল্লায় প্রতিবাদের বিচিত্র প্রকাশ
কুয়াকাটা সৈকত থেকে নিখোঁজ জেলেসহ ২ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
মধুমতীর তীরে ভাঙন, অর্ধশতাধিক স্থাপনা বিলীন
সারাদেশের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে
মার্কিন শুল্ক কমানোয় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়বে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বগুড়ায় গানে গানে শহীদদের স্মরণ করেন শিক্ষার্থীরা
গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান ইউজিসি চেয়ারম্যানের
মার্কিন শুল্ক চাপ সত্ত্বেও জুলাই মাসে দ. কোরিয়ার রপ্তানি রেকর্ড ছাড়িয়েছে
ভূমিকম্পে চিলির খনি ধসে ১ জনের প্রাণহানি
বিশ্ব বাণিজ্য পুনর্গঠনে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ
১০