
।। বিপুল আশরাফ।।
চুয়াডাঙ্গা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জেলা শহরে ডিমচপ, পিঠা ও পেঁয়াজু বিক্রি করে সাড়া ফেলেছেন মর্জিনা বেগম নামে এক নারী। বিকেল থেকে রাত অবধি দোকানটিতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। শহরের টিএনটির মোড়ের সামনে ছোট্ট এ খুপড়ি দোকানে লাইনে দাড়িয়ে চপ, পেঁয়াজু ও পিঠা খেতে দেখা যায় ক্রেতাদের।
কয়েকদিন থেকে জেলায় শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দোকানটিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পাকান পিঠা ও চিতই পিঠা। নানান জায়গা থেকে ক্রেতারা এই মুখরোচক খাবারগুলো খেতে আসেন। এই ব্যবসা করেই ভাগ্য ফিরেছে মর্জিনা বেগমের। এখান থেকে প্রতিদিন ৭/৮শ টাকা রোজগার করেন তিনি। তার দোকানটিতে ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো।
জানা যায়, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত ছোট্ট এই দোকানটিতে ডিমচপ পেঁয়াজুর ব্যবসা করে আসছেন পৌর এলাকার দক্ষিণ গোরস্থান পাড়া নিবাসী মর্জিনা বেগম। বর্তমানে শীতের আগমনীতে এই দোকানটিতে বিক্রি হচ্ছে শীতের পিঠাপুলির পাশাপাশি চিতই পিঠা, পাকান পিঠা, ডিমচপ ও পেয়াজু। বেচা বিক্রিতে মর্জিনা বেগমের ছোট বোন ও তার মেয়ে সহায়তা করে। প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ হাজার টাকার পিঠা ও চপ বিক্রি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে দিনে প্রায় ৭/৮শ টাকা লাভ থাকে বলে জানান। প্রতিদিন এই দোকানটিতে প্রায় ১২ কেজি পেঁয়াজের পেঁয়াজু, ১২ কেজি আলু ও ৫০ পিস ডিমের চপ ও ৮ কেজি চালের চিতই পিঠা বিক্রি হয়। প্রতি পিস পাকান পিঠা ১০ টাকা, চিতই পিঠা ৬ টাকা, ডিমচপ ১০ টাকা ও পেঁয়াজু ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এই ছোট্ট ব্যবসাটি পরিচালনা করেই ৮ জনের সংসার চালাচ্ছেন মর্জিনা বেগম।
কঠোর পরিশ্রমী মর্জিনা বেগম আলাপচারিতায় বলেন, ২০ বছর ধরে এই ডিমচপ পেঁয়াজুর ব্যবসা করে আসছি। বর্তমানে শীত শুরু হওয়াতে পিঠাও বানানো শুরু করেছি। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই দোকানটি খোলা থাকে। সন্ধ্যার পর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বেশি হয়। পাকান পিঠা, চিতই পিঠা, ডিমচপ ও ঁেপয়াজু বিক্রয় করে ক্রেতাদের বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। অনেক ক্রেতারাই দূর-দূরান্ত থেকে এখানে খেতে আসেন। খুব সকালে উঠে বাজারে গিয়ে আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ময়দা, ডিম, তেলসহ অন্যান্য উপাদান কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরি। তারপর থেকেই পেঁয়াজু, চপ ও পিঠা তৈরীর উপাদান জোগার যন্ত্রের কাজ শুরু করি। বিকেল ৩টার দিকে জ্বালানী খড়িসহ ওইসব মালামাল নিয়ে টিএনটি মোড়ের দোকানে চলে আসি। এরপর এগুলো বানানো শুরু করি। আমরা এখানে ৪ জন কাজ করি। বিকাল ৫টার থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বেচাকেনার চাপ বেশি থাকে। তবে কাস্টমাররা আমার ডিমচপসহ পিঠা খেতে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে। তবে আমার দোকানটা একটু বড় পরিসরে হলে আরো ভালো হতো, ক্রেতাদের আপ্যায়ন করতে আরো সুবিধা হত। অনেক ক্রেতাদের বসতে দিতে পারিনা।
পিঠা খেতে আসা ক্রেতা রাকিব হাসান বলেন, শহরের মধ্যে এই ছোট্ট দোকানটি বেশ সারা জাগিয়েছে। দোকানটি ছোট হলেও এখানকার খাবারের স্বাদ বেশ ভালো। আমি সেই জাফরপুর থেকে এখানেই পিঠা ও চপ খেতে এসেছি। এর আগেও অনেকবার এখান থেকে পিঠা ও চপ খেয়েছি। এখানকার পিঠা ও চপগুলোর স্বাদ আমার খুব ভালো লাগে। তবে শীত বেশি পড়লে শীতের পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।