খুলনায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের মামলা

বাসস
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:২০

ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : খুলনার আড়ংঘাটা বাজারে ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় প্রায় ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় এজেন্টসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক  জানায়, এস. এম. সোহেল মাহমুদ ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর খুলনার আড়ংঘাটা বাজারে ‘মুনমানহা’ নামে ডাচ-বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার অনুমোদন পান। এ শাখার গ্রাহকরা ছিলেন মূলত স্থানীয় স্বল্পশিক্ষিত, গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্য। তারা ব্যাংক হিসাব খোলা, অর্থ জমা ও উত্তোলন, ইউটিলিটি বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতেন।

তবে এস. এম. সোহেল মাহমুদ, শাখার টেলার মো. আব্দুল হান্নান এবং আউটলেট রিলেশনশিপ অফিসার পলি খাতুন বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে জমা না দিয়ে মোট ৯৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬৬ টাকা আত্মসাৎ করে শাখাটি বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।

প্রতারিত গ্রাহকরা খুলনা রিজিওনাল অফিসে অভিযোগ করলে ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসের রিজিওনাল হেড এইচ. এম. কামরুজ্জামান এবং এরিয়া ম্যানেজার মো. আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ ফেরত দেয়নি।

ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র এজেন্ট ব্যাংকিং পলিসি (২০২২)এর ১৪(০) ধারা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অন এজেন্ট ব্যাংকিং ফর দ্য ব্যাংকস-এর ১০(০) ধারা অনুযায়ী, নিয়োগকৃত এজেন্টের অনিয়ম বা প্রতারণার দায়ভার ব্যাংককেই বহন করতে হয়। কিন্তু ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুনমানহা শাখার ৫০ জন গ্রাহক বিভিন্ন সময়ে মোট ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৯০ টাকা জমা করেন, যার মধ্যে ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৮২৪ টাকা উত্তোলন করেন। অবশিষ্ট ৯৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬৬ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক নিম্নোক্ত নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা অনুমোদন দিয়েছে। আসামিরা হলেন ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) মো. সাহাদাৎ হোসেন, মুনমানহা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার প্রোপাইটর এস. এম. সোহেল মাহমুদ, টেলার মো. আব্দুল হান্নান, আউটলেট রিলেশনশিপ অফিসার পলি খাতুনসহ অন্যান্যরা।

দুদক জানায়, ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়িত্বে অবহেলা, প্রতারণা ও আত্মসাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকায় তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত প্রধান উপদেষ্টা 
সাভারে অভিযানকালে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং জরিমানা আদায়
উলিপুরের হাতিয়া গণহত্যা দিবস: দাগারকুটিতে ৬৯৭ মানুষের প্রাণহানি
ভোলায় বিএনপি প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহিমকে গণসংবর্ধনা 
টাইফয়েড টিকাদানে ৯৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে চসিক
হিমু-বন্যাদের প্রশংসায় ভারতীয় কোচ
সরকার ৮০ হাজার টন সার, ১.২০ কোটি লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করবে
তদন্ত কমিটিতে নতুন দু’জন সদস্য যুক্ত করল বিসিবি
চট্টগ্রামে ভোক্তার অভিযানে ৬ প্রতিষ্ঠানকে লাখ টাকা জরিমানা
নির্বাচন বানচালের জন্য দেশী-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে: নুর
১০