শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' পালন করেছে এবং দিনটিকে ‘লন্ডন বহুভাষিক দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
আজ এখানে প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডনের কেনসিংটনের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘সেফগার্ডিং ইনডিজেনাস ল্যাংগুয়ুজেস থ্রু ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম লন্ডনের মেয়রের প্রতি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন শিগগিরই এ বিষয়ে লন্ডনের মেয়রের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠাবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড। লন্ডন ভিত্তিক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, হাইকমিশনার, রাষ্ট্রদূত এবং ১৭টি দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের বিশিষ্টজনরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দূতাবাস বা হাইকমিশনের প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা মহান ভাষা শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করে নিজ নিজ ভাষায় সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
ভারত, কুয়েত, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, আর্জেন্টিনা, কিউবা, সাইপ্রাস, মিশর, রুয়ান্ডা, প্যালেস্টাইন, জর্ডান, উগান্ডা এবং রোমানিয়ার মিশন অন্যান্যদের মধ্যে এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
আলোচনায় প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড প্রতিটি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও চর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
কমনওয়েলথ মহাসচিব বাংলাদেশে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও চর্চার অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেন।
স্কটল্যান্ড বলেন, ‘আজও বাংলাদেশে ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা নিতে পারি।’
যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০০টি মাতৃভাষা রয়েছে এবং লন্ডনে প্রায় ২০০টি ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে তাসনীম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন বহুভাষিক দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা খুবই যৌক্তিক। আজকের ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোও এ বিষয়ে একই মত প্রকাশ করেছে।
আলোচনায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য পল ক্রিস্টো বলেন, যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায় অমর একুশের মহান আদর্শকে ধারণ করে চলেছে, যা আগামী দিনে অন্যান্য ভাষার মানুষকে এদেশে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশে উৎসাহিত করবে।
যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে উদীচী স্কুল অব পারফর্মিং আর্টসের শিল্পীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি গেয়ে শোনান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং আমন্ত্রিত অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তারা প্রতীকী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
এর আগে তাসনীম অর্ধনমিতভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ুু ও সাফল্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে হাইকমিশনার ও টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র লুৎফুর রহমান যৌথভাবে পূর্ব লন্ডনের শহীদ আলতাব আলী পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে তাসনিম মিশনের কর্মকর্তাদের সাথে আরও একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।