শিরোনাম
নড়াইল, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : জেলায় আজ বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৭তম জন্ম বার্ষিকী পালিত হয়েছে। সকাল ৯ টায় জেলা প্রশাসন ও নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্ট্রের আয়োজনে কোরআন খানী, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, গার্ড অব অনার প্রদান ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রস্থাগারে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্ট্রের সদস্য সচিব আজিজুর রহমান ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে মোস্তফা কামাল প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা(নূর মোহাম্মদ নগর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তান। লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত। ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর, বর্তমানে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ-বিজিবি) যোগদান করেন। দিনাজপুর সীমান্তে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই বদলি হন যশোর সেক্টরে। পরবর্তীতে তিনি ল্যান্স নায়েক পদোন্নতি পান।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নং সেক্টরে অংশগ্রহণ করে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন নড়াইলের এ সাহসী সন্তান (নূর মোহাম্মদ)। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এস এ মঞ্জুর। এদের নেতৃত্বে প্রাণ-পণ লড়েছেন নূর মোহাম্মদ।
৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলেও সহযোদ্ধাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রুপক্ষের সাথে যুদ্ধ করেছেন। গুলি ছুঁড়েছেন হঠাৎ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙ্গে যায়। তবুও গুলি চালান। শক্রমুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান এ সাহসী সন্তান। যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃতুবরণ করেন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।