শিরোনাম
বাদল নুর
ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় নিবেদিত বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাল ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেস’ (এনআইসিভিডি)।
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে অগণিত রোগীকে সেবা দিয়ে আসছে। সময়ের ব্যবধানে এতে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে অতিরিক্ত রোগীর চাপ ও শয্যা সংকটের কারণে সেবাদানে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে হাসপাতালটিকে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত হাসপাতালটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, মেঝেতে সারিবদ্ধভাবে বিছানা পেতে থাকা রোগীর ভীড়। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় এভাবে কষ্টকর পরিস্থিতিতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চিকিৎসকরা প্রথমে বিভিন্ন পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এসব পরীক্ষার টাকা জমা দিতে দীর্ঘক্ষণ এমনকি অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পড়তে হয় নানা ঝক্কি-ঝামেলায়।
ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী ইসিজি, ইকো ও অ্যাঞ্জিওগ্রাম পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকা রোগী ও তাদের পরিচারকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখতে পান বাসস সংবাদদাতা।
কুমিল্লার লাভলু হোসেন তার ভাইকে ভর্তি করেছেন হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য। তিনি বলেন, এখানকার চিকিৎসা খুবই ভালো। তবে, রোগীর চাপে সেবাপ্রার্থীদের অনেককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এটি সঠিক ও যথাসময়ে চিকিৎসা প্রাপ্তির অন্তরায়।
অপর এক রোগী আফসার আলী হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও উন্নতমানের চিকিৎসার গুণগত মান ও অধিক সংখ্যক রোগীর চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টিতে হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এনআইসিভিডিতে এখন মোট ১২৬০টি শয্যা রয়েছে যা চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। তারা জানান, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়। টিকিটের দাম ১০ টাকা। প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন।
১০-১২ জনের একটি চক্রকে ইঙ্গিত করে হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে শয্যা ব্যবসার অভিযোগ করেন কয়েকজন রেগী। তাদের অভিযোগ, এখানে বিনামূল্যে সিট বরাদ্দের ব্যবস্থা থাকলেও এই অসাধু চক্র রোগীদের সিটের ব্যবস্থা করে দিতে টাকা আদায় করে থাকে। এদের কারণে বিনামূল্যে শয্যা পাওয়া অসম্ভব।
এনআইসিভিডির পরিচালক অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, কোনো কোনো সেকশনে অতিরিক্ত চাপের সুযোগে রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে এ ধরনের অবৈধ সুবিধা নিতে পারে। এ ধরনের কাউকে হাসপাতালে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে রোগী ও তাদের স্বজনদের এই ধরনের অন্যায্য সুবিধা না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দালালদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে রোগীর প্রচণ্ড চাপ মোকাবেলা করতে হয়। রোগীর চাপ কমাতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনেরও পরামর্শ দেন তিনি।