শিরোনাম
রংপুর, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিডিআরকে ধ্বংস করে বিজিবিকে চৌকিদারের দায়িত্ব দিয়েছিল। তারা সারাদেশে গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ক্ষমতায় যারা ছিলেন তারা দেশের মালিক হয়ে বসেছিলেন। সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করার পর তারা জামায়াতে ইসলামীর ওপর হাত দিয়েছিল। তারপর হাত দিয়েছে হেফাজতের ওপর। বিচার বিভাগ ধ্বংস করে দেশের মানুষকে অনিশ্চয়তার পথে বসিয়েছিল। বিরোধী মত দমনে তারা বিচার বিভাগকে কাজে লাগিয়েছিল।
ডা. শফিকুর রহমান আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলার মিঠাপুকুর কলেজ মাঠে আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যাংকগুলো ফাঁকা করেছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে বসেও দেশের বিরুদ্ধে ফুসফাস করে যাচ্ছে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। এই দেশকে আবারও সুন্দর করে সাজানো হবে। যে সমাজে সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। বৈষম্য মুক্ত মানবিক বাংলাদেশ তৈরি করবে জামায়াতে ইসলামী।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিকদের তারা সহ্য করতে পারে না। তারা খুন, গুমের পাশাপাশি আয়নাঘর তৈরি করেছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকেও নির্যাতন করেছে। দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগ স্বাভাবিকভাবে চলতে দেয়নি। সবচেয়ে বড় আঘাত দিয়েছে বিচারবিভাগের ওপর।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের দুনিয়া থেকে বিদায় করেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। কারণ, দেশ বাঁচলে আমিও বাঁচব, সবাই বাঁচবে। অশান্তি হলে সবাইকে তা ভোগ করতে হবে। আমরা একটা শান্তিপূর্ণ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
বিগত সরকারের আমলে জামায়াত ইসলামী সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত ১৩ বছর সারাদেশে আমাদের অফিস সিলগালা ছিল। আমাদের দলকে নির্বাচন কমিশন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের প্রতীক ও নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই চাপ আর কোনো দল পায়নি। ৫ আগস্টের আগে দেশে দখলদারি-চাঁদাবাজি হয়েছে। এখনো হচ্ছে। শুধু ফ্ল্যাগ বদল হয়েছে, ডান হাত থেকে বাম হাতে গেছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষ জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করব, শান্তির বাংলাদেশ গড়ব। আমরা কোনো দায়িত্ব পেলে মালিক হিসেবে নয়, পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করব। আমাদের নেতা-কর্মীদের আগে যে সম্পদ থাকবে, নির্বাচনের পরও সমান থাকবে। নিজের দিকে না তাকিয়ে জনগণের দিকে তাকাতে হবে। আমাদের কর্মীদের স্পষ্ট বলা হয়েছে, কারও সম্পদের দিকে তাকানো যাবে না। যদি এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আমির আসাদুজ্জামান শিমুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবুল হাসনাত মো. আব্দুল হালিম এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর জেলা সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এনামুল হক ও রংপুর মহানগর আমির এটিএম আযম খান প্রমুখ।