বাসস
  ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৬

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ চীনের শীর্ষ কূটনীতিকের

বেইজিং, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক) : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার ইরানের সমকক্ষের সাথে ফোনালাপ করেছেন।
বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইরান বলেছে, তারা ইসরায়েলের ভূখন্ডে প্রথমবারের মতো হামলার পর ‘সংযম প্রদর্শন করতে ইচ্ছুক।’
ইসরায়েল চলতি সপ্তাহে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কায় বিশ্ব নেতারা উত্তেজনা কমানোর জন্য এ ব্যাপারে সংযম প্রদর্শনের আহবান জানিয়েছেন।
চীন ইরানের ঘনিষ্ঠ ও বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং দেশটির অনুমোদিত তেলের শীর্ষ ক্রেতা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে উত্তেজনা হ্রাসে তেহরানের ওপর তাদের প্রভাব ব্যবহার করার জন্য চীনের কাছে বারবার আবেদন করেছে।  এটি এখন বর্তমানে ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষের কারণে চরম অবস্থায় রয়েছে।
বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, টেলিফোন আলাপকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কোতে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে১ এপ্রিলের হামলার বিষয়ে ওয়াং ইকে অবহিত করেন। তেহরান বলেছে এর জবাবে তারা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ওয়াংকে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ‘এই হামলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দেয়নি’ এবং ‘ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’
বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতি ‘খুবই স্পর্শকাতর’ উল্লেখ করে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, ইরান ‘সংযম করতে ইচ্ছুক’ এবং আরও উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই।
ওয়াং বলেন, চীন ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলার ‘তীব্র নিন্দা ও  বিরোধিতা করে’ এবং এটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করছে।
চীন ইরানের হামলাকে প্রতিক্রিয়া হিসাবে এবং এটিকে ‘আত্মরক্ষার’ সীমিত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে।
ওয়াংকে উদ্ধৃত করে সিনহুয়া বলেছে, ‘চীন আঞ্চলিক এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে টার্গেট  না করার জন্য এবং সেইসাথে একটি ভাল-প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি অব্যাহত রাখায় ইরানের প্রশংসা করেছে।’
এতে বলা হয়, ‘এটি বিশ্বাস করা হয় যে, ইরান পরিস্থিতি ভালভাবে পরিচালনা করতে পারে এবং নিজের সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা রক্ষা করে এই অঞ্চলকে আরও অশান্তি এড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।’
তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিডআউট বলেছে, আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ওয়াংকে ইরানের ‘বৈধ পদক্ষেপ’ সম্পর্কে অবহিত করেছেন এবং ‘হোয়াইট হাউসকে সতর্ক করেছেন’  ইরানের স্বার্থ বা সুরক্ষার ওপর আরও আক্রমণ একটি ‘নির্ধারক, যা অবিলম্বে এবং ব্যাপক’ প্রতিক্রিয়াকে উসকে দেবে।
সিনহুয়া জানায়,পররাষ্ট্রন্ত্রীরা টেলিফোন আলাপকালে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন। ওয়াং বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘গাজায় ক্রমবর্ধমান সংঘাতের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন।
চীন ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনের বিষয়ে সহানুভূতিশীল। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা বন্ধ এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে গাজায় কমপক্ষে ৩৩,৭৯৭ জন নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
সিনহুয়া জানায়, ওয়াং বলেছেন,‘চীন ইরানের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে ইচ্ছুক এবং ফিলিস্তিন সমস্যার একটি ব্যাপক, ন্যায্য এবং দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য যৌথভাবে জোরালো ভূমিকা রাখতে চায়।’  
ওয়াং সোমবার তার সৌদি প্রতিপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা।
এতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা এড়াতে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।