বাসস
  ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৬:০৪
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৯:৩৩

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি দিলীরুজ্জামানকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তাব তৈরি : আইনমন্ত্রী

ঢাকা, ১৮ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, গতকাল জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এই প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। 
আজ জাতীয় সংসদের টানেল গেটে প্রেস ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। এই প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে এবং তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
কোটা সংস্কার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেছেন, সরকার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত। সরকার তাদের সঙ্গে বসতে রাজি আছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে আজই আলোচনায় বসতে রাজি। 
আইনমন্ত্রী বলেন, এ আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে (আইনমন্ত্রী) ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার দায়িত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামী ৭ আগস্ট আপিল বিভাগে কোটা বিষয়ক মামলাটির শুনানির দিন নির্ধারিত আছে। এই মামলার শুনানির সময় এগিয়ে আনার জন্য আগামী রোববার আদালতে সরকার পক্ষ আবেদন করবে। এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি এবং বিষদভাবে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করেছি। দেখা যায় যে, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে, তাদের কিন্তু এটাই দাবি ছিল। এবং যেহেতু সরকার তাদের দিক বিবেচনা করে এই দাবিগুলোতে আলোচনায় রাজি হয়েছে। আমার মনে হয়, আজকে থেকে আন্দোলন করার আর কোনো প্রয়োজন নেই। আমি সেই কারণে তাদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি, একজন পিতৃতূল্য নাগরিক হিসেবে তাদেরকে অনুরোধ করছি, তারা যেন সহিংসতা বন্ধ করে এবং এই আন্দোলন প্রত্যাহার বা স্থগিত করে।’
আলোচনার প্রস্তাব দিতে সরকার দেরি করল কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজকেই তারা প্রস্তাব দিয়েছে, তারা আলোচনা করতে রাজি আছে। আজকেই আমরা রাজি হয়েছি। এটা দেরি কোথায় হল আপনিই বলেন।’
সরকার আদর্শিকভাবে কোটা সংস্কারের পক্ষে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে একটা কথা বলতে চাই। এর আগেও বলেছি, এখনও বলছি। মামলাটা আদালতে আছ। তাও সর্বোচ্চ আদালতে। যখনই আদালতে এই মামলার শুনানি শুরু হবে তখন সরকার পক্ষ অবশ্যই কোটার সংস্কারের ব্যাপারে একটা প্রস্তাব দেবে। এবং আমার মনে হয়, আমরা যেহেতু সংস্কারের পক্ষে তাই কোটা সংস্কার করার জন্য প্রস্তাব দেব। সেজন্য আপনারা বলতে পারেন আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে।’
এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির আগে নির্বাহী বিভাগ কেন পদক্ষেপ নিল না সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলতে চাই, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কিন্তু কোটা বাতিল করা হয়েছিল। বাতিলের ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা হাইকোর্ট বিভাগে গিয়েছিল। কিন্তু কোটা আন্দোলকারীরা তখন কোন পক্ষভুক্ত হয়নি। তারপরে রায়ের পরে তাদের আন্দোলন শুরু হল। তখনও কিন্তু তারা আদালতে যায়নি। পরে তারা আদালতে গেছে। এজন্য আগেও সাধুবাদ জানিয়েছি। এখনও সাধুবাদ জানাচ্ছি। আদালত যখন এই রায় দিয়েছে- তখন এই প্রশ্ন ও এই আন্দোলনের শুরু হয়েছে। আমি শুধু এইটুকু বলব, তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তারা তাদের বক্তব্য বলেছে। আন্দোলন বন্ধের জন্য আমরা অনুরোধ করেছি। আদালতে যেতে অনুরোধ করেছি। তারা আদালতে গেছেন। আদালত সিদ্ধান্ত নিলেই আমরা সেটা করতে পারি। বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে। আপনারা ইতিহাস খতিয়ে দেখতে পারেন, আদালতে কোনো প্রশ্ন উঠলে যতক্ষণ পর্যন্ত না আদালত তা শেষ করে, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ কোন সিদ্ধান্ত নেয় না।’
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।