বাসস
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২৬
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৩৯

ইউপি চেয়ারম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী সকলকেই জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে : তারেক রহমান

ফরিদপুর, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকল স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি-আধা সরকারি ও অন্যান্য সকল খাতকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে কোন জবাবদিহিতা ছিল না, ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল দেশের মানুষ। তাদের দেড়-দশকেরও বেশি সময়ের শাসনামলে জনপ্রতিনিধিরা চলেছে আওয়ামী লীগের নিয়মে।

বিএনপি স্থানীয় সরকারের প্রথম স্তর ইউপি চেয়ারম্যান থেকে সরকার প্রধান (প্রধানমন্ত্রী) এবং সরকারি-আধা সরকারি ও অন্যান্য সকল খাতকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চায়-এ কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘তিনি যেই হোন না কেনো, জনগণের কাছে তাদের সকলকেই দায়বদ্ধ ও জবাবদিহি করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আমলে জবাবদিহিতা ছিল না বলেই তাদের নেতাকর্মীরা অর্থ পাচার করতে পেরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই, এমন একটা স্বাস্থ্যখাত তৈরি করতে চাই যাতে করে আর কাউকে চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে না হয়।’  

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজ শনিবার ফরিদপুর সদর উপজেলা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক ফরিদপুর বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালালায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ‘অনলাইন প্লাটফর্মে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

বিএনপি’র প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় তারেক রহমান জানান, এ দলের প্রতি জনগণের আস্থা আছে, এটা মনে করে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। দেশের মানুষের সেই আস্থা ধরে রাখতে হবে। কারণ, একজন নেতার পুঁজি হচ্ছে মানুষের আস্থা। আর রাজনৈতিক দলের পুঁজি হচ্ছে দলের প্রতি জনগণের আস্থা। সেই আস্থা চলে গেলে দলের পুঁজিই চলে যাবে। কাজেই জনগণের আস্থা ধরে রাখতে সবাইকে নিজ-নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল, আর রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচন চাবে সেটাই স্বাভাবিক। বিএনপি চায় সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশে অবাধ একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনে মানুষ নির্ভয়ে তাদের ভোট দেবে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজ অনেক ব্যাক্তি ও সংগঠন সংস্কারের কথা বলছে, আমাদের ৩১ দফায় স্পষ্টভাবে সকল সেক্টরে, সকল পর্যায়ে সংস্কারের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। হয়তো একবারে সব করা সম্ভব নয়, তবে পর্যায়ক্রমে সবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

তারেক রহমান এ কর্মশালায় এই প্রথম উল্লেখ করেন, তাঁর দল বিএনপি চায় দেশে পরপর দু’বারের বেশী কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। তিনি এ সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়ণের কথাও ব্যক্ত করেন।

এসময় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজকের কর্মশালায় আপনারা যা শিখলেন ও জানলেন, সেটা নিয়ে আপনার ওয়ার্ড, মহল্লা ও থানায়-থানায় গিয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে যাবেন এবং তাদেরকে এ বিষয়ে জানাবেন, বোঝাবেন।’

ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এই কর্মশালায় ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর জেলার জেলা ও মহানগর পর্যায়ের প্রায় ৪ শতাধীক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্ল্যাহ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, খন্দকার মাসুকুর রহমান, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াবা ইউসুফ, কেন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির ড. মাহাদি আমিন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ইছা বক্তৃতা করেন।