ঢাকা, ২০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে আলোচনা বর্তমানে চলছে তার জন্য গত ১৪ বছর ধরেই লড়াই অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আজ (রোববার) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৫ তম দিনের আলোচনার প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন ।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, 'গত ১৪ বছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা সবাই যুক্ত ছিলাম। এ আলোচনায় এসে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছি।'
দ্রুতই এর রূপরেখা ও কাঠামো নিয়ে একমতের জায়গায় আসার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'কমিশন এটা শুধু আশা করে না, বিশ্বাস ও করে।'
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়ন।জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চাই। এটা আপনারাও নিঃসন্দেহে চান। তাই আমাদের পক্ষে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হচ্ছে।'
তিনি আরো বলেন, 'ইতোমধ্যে আমরা অনেক বিষয়ে একমত হয়েছি। কিছু কিছু বিষয় আছে আলোচনার মধ্য দিয়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।যেটা আপনাদের ইচ্ছা, আমাদের ইচ্ছা, সকলের প্রচেষ্টা। দেশের সবাই সেটা প্রত্যাশা করছেন।’
কমিশনের উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ‘কমিশন বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। অধিকতর আলোচনার প্রয়োজন বলে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে আরেকটু সময় নিয়ে বিবেচনা করা দরকার।'
সেইসঙ্গে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তাভাবনা ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনাদের আলোচনা পর্যালোচনার পাশাপাশি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কী কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, অন্যান্য বিষয় সংশ্লিষ্ট সেগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আশা করছি, দু-তিন দিন পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারব।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া।
উল্লেখ্য, আজকের আলোচ্য সূচিতে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান দুটি বিষয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
আলোচনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন।