
ঢাকা, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের আত্মাহুতি যেনো বৃথা না যায়।’
তিনি বলেছেন, ‘মতপার্থক্য থাকবেই, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। কিন্তু এ কারণে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের আত্মাহুতি যেন বৃথা না যায়। একটি স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ যেন থমকে না যায়। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে সুসংহত করার লক্ষ্যে ঐক্য ধরে রাখার হবে।’
আজ মঙ্গলবার, জাতীয় প্রেসক্লাবে অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ ও তার স্ত্রী সালমা আলো প্রণীত গ্রন্থসমূহের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘকাল চেপে বসা একটি স্বৈরতন্ত্রের অবসান হয়েছে। আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করার। কোনভাবেই যেন এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়।
ড. মাহবুব উল্লাহ আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম নেপথ্যের কারিগর উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, বৈষম্যহীন অর্থনীতি এবং আধিপত্যবাদ বিরোধী রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন ড.মাহবুব উল্লাহ। তার প্রত্যেকটি লেখার মধ্যে সত্যিকার স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন ফুটে উঠেছে।
লেখক ও চিন্তাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির রাষ্ট্র গঠনে ভিশন ২০৩০ ভাবনা জাতির সামনে আনা হয়েছিল যার মূল বিষয় ঠিক করার কাজ ছিল মাহবুব উল্লাহর। ভিশন ২০৩০ প্রণয়নে অনেক বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। এমনকি ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে আমরা যখন আন্দোলন করেছিলাম তখনও অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন ড. মাহবুব উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ব্রিটিশরা এ দেশের মানচিত্র নিয়ে অনেক খেলাধুলা করেছে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলেও পরে তা চাপের মুখে রদ করা হয়। তখন যদি বঙ্গভঙ্গ রদ না হতো, তাহলে ১৯৪৭ সালে যে একটা কৃত্রিম রাষ্ট্র পাকিস্তান তৈরি হয়, সেটিরও প্রয়োজনীয়তা থাকত না। আর যদি তা হতো, তাহলে এরপরে স্বাধীনতার যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, সেটিরও প্রয়োজন হতো না।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগান্তর সম্পাদক, কবি আবদুল হাই শিকদার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আমিন ব্যাপারী, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হায়াত হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন।
আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী ও লেখক নজমুল হক নান্নু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ শাহান প্রমুখ।