
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) আজ যৌথ অংশীদারিত্বে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও অন্যান্য প্রধান শহরে নিম্ন-কার্বন নিঃসরণ ভিত্তিক নগর উন্নয়নকে তরান্বিত করতে একটি নতুন প্রকল্প উদ্বোধন করেছে।
গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)-এর অর্থায়নে এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- জ্বালানি দক্ষতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো এবং টেকসই নগরায়ণ গড়ে তোলা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘প্রোমোটিং এনার্জি-রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট (এলসিইউডি) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)।
জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে (কপ৩০) সামনে রেখে ঢাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সম্মেলন কক্ষে এই প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদির ছিদ্দিকী, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নূর আহমদ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মো. শাহরিয়ার কাদির ছিদ্দিকী সরকারের জলবায়ু-সচেতন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প আমাদের শহরগুলোতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তুলবে।
তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদানের জন্য ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ঘাটতিগুলো পূরণ, সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং এই প্রচেষ্টাকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরেও সম্প্রসারণের জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা জরুরি, যাতে সবার জন্য পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর নগর জীবন নিশ্চিত করা যায়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও টেকসই নগরায়ণে ইউএনডিপির জোরালো সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ইউএনডিপি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নগর উন্নয়ন কর্মসূচিতে কাজ করে আসছে। এই প্রকল্প সেই সহযোগিতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন মাত্রা যোগ করবে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় টেকসই, নিম্ন-কার্বন নির্গমনভিত্তিক নগর উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এমন ফলাফল অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা বাস্তব পরিবর্তন বয়ে আনবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নূর আহমদ বলেন, এই প্রকল্প নিম্ন-কার্বন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য নগর কেন্দ্রগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ খাতে মনোযোগ দেবে। এটি উন্নত অবকাঠামো ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের সহনশীলতা বাড়াবে।
নূর আহমদ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই প্রকল্পের যাত্রা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। আমরা এর সূচনায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে সময়মতো ও কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আমরা সতর্ক থাকব।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইআরডির জাতিসংঘ উইংয়ের প্রধান অতিরিক্ত সচিব এ কে এম সোহেল, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম. আসাদুজ্জামান, স্রেডা চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমেদ, স্রেডার নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন পরিচালক (উপসচিব) প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে এলসিইউডি প্রকল্পটি জলবায়ু সহনশীল ও জ্বালানি-দক্ষ নগর গঠনের একটি পুনরাবৃত্তিযোগ্য মডেল তৈরি করবে। এটি বাংলাদেশকে একটি সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে রূপান্তরে সহায়তা করবে।