বাসস
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৪৮

আর্সেনালকে বিদায় করে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে লিভারপুল, ডি ব্রুইনাইর ফেরার ম্যাচে সিটির জয়

লন্ডন, ৮ জানুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ম্যাচের শেষ ভাগে দুই গোল দিয়ে প্রিমিয়ার লিগ জায়ান্ট আর্সেনালকে বিদায় করে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ড নিশ্চিত করছে লিভারপুল। শেষ ১০ মিনিটে জাকুব কিওরের আত্মঘাতি গোলের পর ইনজুরি টাইমে লুইস দিয়াজের গোলে লিভারপুলের  ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয়। 
এদিকে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ম্যানচেস্টার সিটি দলে ফিরেছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। তার ফেরার ম্যাচটিকে সতীর্থরা হাডার্সফিল্ডকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে স্মরণীয় করে রেখেছে। যদিও কাল এমিরেটস স্টেডিয়ামে তৃতীয় রাউন্ডে ব্লকবাস্টার লড়াইয়ে লিভারপুলের জয়টাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। 
আর্সেনাল গোলের অনেকগুলো সুযোগ হাতছাড়া করেছে। ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ডের ফ্রি-কিক থেকে ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে পোলিশ ডিফেন্ডার জ্যাকুব কিওরের আতঘাতি গোলে ডেডলক ভাঙ্গে লিভারপুল। স্টপেজ টাইমে দিয়াজের গোলে ব্যবধান দ্বিগুন হবার পাশাপাশি রেডসের জয় নিশ্চিত হয়।
এটি ছিল টুর্নামেন্টে ২০০১ সালের ফাইনালের পর আর্সেনালের বিপক্ষে লিভারপুলের প্রথম জয়। একইসাথে প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এটি একটি মানসিক জয়ও। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এনিয়ে আর্সেনাল শেষ ছয়টি ম্যাচে মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছে। একইসাথে এফএ কাপ ও লিগ কাপ থেকেও বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা দৌড়ে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের তুলনায় গানার্সরা পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। 
কাল ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে ক্লপ যেভাবে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন তা অনুমেয় ছিল। নিজের মেয়াদে লিভারপুলকে চতুর্থ শিরোপা উপহার দেবার পথে এই ধরনের জয় খুবই জরুরী, তা ভালভাবেই অনুমান করতে পারে দল । ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘শেষভাগে আমরা নিজেদের প্রমান করেছি। এই ম্যাচ জয় করতে পেরে আমরা দারুন খুশী। আর্সেনালের জেতার সব সম্ভাবনাই ছিল। আমরা দারুনভাবে নিজেদের প্রমান করেছি।’
ডিসেম্বরে প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনালের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল রেডসরা। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে লিগ কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ফুলহ্যামের মোকাবেলা করবে ক্লপ বাহিনী। একইসাথে ইউরোপা লিগের শেষ ষোলতেও খেলবে।  
আফ্রিকান নেশন্স কাপ ও এশিয়ান কাপের জন্য যথাক্রমে মোহাম্মদ সালাহ ও ওয়াটারু এনডোকে এবং অসুস্থতার কারনে ভার্জিল ফন ডিককে দলে পাননি ক্লপ। ম্যাচের শুরুতেই মার্টিন ওডেগার্ড আর্সেনালকে এগিয়ে দেবার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ১২ গজ দুর থেকে এই মিডফিল্ডারের শট বারে লেগে ফেরত আসে। বেন হোয়াইটের জোড়ালো শট লিভারপুল গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার কোনমতে কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন। এর মধ্যে কেই হাভার্টজ দুটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। ঐ সময় কোচ মিকেল আর্তেতা আর্সেনালের পরাজয়ের শঙ্কা করেছিলেন। বুকায়ো সাকার ভলি অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে আর্তেতাকে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। 
বিরতির পর শেষ পর্যন্ত লিভারপুল ম্যাচে প্রাণ ফিরে পায়। দিয়াজের শট কোনমতে রক্ষা করেন এ্যারন রামসডেল, দিয়োগো জোতার শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৮০ মিনিটে আলেক্সান্দার-আর্নল্ডের ফ্রি-কিক নিজের জালে হেডের সাহায্যে ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রবেশ করান কিওর। স্টপেজ টাইমে জোতার পাস থেকে দিয়াজ ১০ গজ দুরত্বের শটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। 
আগস্টে বার্নালির বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারনে সাইডলাইনে চলে গিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা। চ্যাম্পিয়নশীপে ধুকতে থাকা হাডার্সফিল্ডের বিপক্ষে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শেষ পর্যন্ত বদলী হিসেবে ডি ব্রুইনা ৫৭ মিনিটে খেলতে নামেন। 
ফিল ফোডেন ও জুলিয়ান আলভারেজের চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোলে প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে  লিড নিয়েছিল সিটিজেনরা। দ্বিতীয়ার্ধে বেন জ্যাকসনের আত্মঘাতি গোল, ফোডেনের দ্বিতীয় গোলের পর জেরেমি ডকুর স্ট্রাইকে বড় জয় পায় পেপ গার্দিওলার দল। ডকুর শেষ গোলটিতে সহযোগিতা করেছেন ডি ব্রুইনা। তার লফটেড পাসে ডকু কোন ভুল করেননি। মধ্যমাঠে ডি ব্রুইনার অসাধারণ নৈপুন্য এতদিন দারুন মিস করেছে সিটি। প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও এফএ কাপের শিরোপা ধরে রাখার পিছনে ডি ব্রুইনার অবদান নি:সন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। 
গার্দিওলা বলেছেন, ‘তাকে ফিরে পেয়ে আমরা দারুনভাবে খুশী। কারন কেভিন আমাদের ম্যাচ জয় করতে সহযোগিতা করে। কেভিন সত্যিই ব্যতিক্রম, সে অনন্য।’
কেনিলওয়ার্থ রোডে তৃতীয় টায়ারের দল বোল্টনের সাথে গোলশুন্য ড্র করেছে প্রিমিয়ার লিগে ধুকতে থাকা লুটন।
লিগ ওয়ানের প্রতিপক্ষ ব্ল্যাকপুলের সাথে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নুনো এস্পিরিতো সান্তোর নটিংহ্যাম ফরেস্ট। 
লন্ডন স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টায়ারের ব্রিস্টল সিটির সাথে ১-১ গোলে ড্র করতে বাধ্য হয়েছে ওয়েস্ট হ্যাম।