বাসস
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:১৪

ভারতের সমতা ফেরানোর ম্যাচে চার স্পিনার নিয়ে খেলার পরিকল্পনা ইংল্যান্ডের

বিশাখাপতœম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস) : আগামীকাল থেকে বিশাখাপতœমে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অনভিজ্ঞ ভারতীয়  ব্যাটিং লাইন আপের বিরুদ্ধে দলের সব স্পিনারদের নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা সফরকারী ইংল্যান্ডের।  
গত সপ্তাহে হায়দারাবাদে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯০ রানে পিছিয়ে থেকেও স্পিনারদের দাপটে ২৮ রানে ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ড। ২০১৩ সাল থেকে ঘরের মাঠে ৪৭ টেস্টে চতুর্থ হারের স্বাদ পায় ভারত। 
দলের সেরা তিন খেলোয়াড় বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ছাড়াই পাঁচ ম্যাচ সিরিজে সমতা ফেরানোর মিশনে নামবে ভারত। স্পিনাররা  ম্যাচের শুরু থেকেই উইকেট থেকে অনেক বেশি টার্ন পাবে  বলে ধারনা করা হচ্ছে।
ইনজুরির কারনে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন রাহুল ও অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। তাদের জায়গায় ব্যাটার সরফরাজ খান, দুই স্পিন অলরাউন্ডার সৌরভ কুমার এবং ওয়াশিংটন সুন্দরকে দলে নিয়েছে  ভারত।
সিরিজ শুরুর আগে ব্যক্তিগত কারনে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়ান কোহলি। তার জায়গায় ব্যাটার রজত পটিদারকে নেওয়া হয়। 
ভিসা নিয়ে জটিলতা শেষে রোববার দলের সাথে যোগ দিয়েছেন ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা স্পিনার শোয়েব বশির। 
ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম জানিয়েছেন, ইংল্যান্ড যদি চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামে তাহলে বোলিংয়ে ইনিংস শুরু করতে পারেন বশির। 
সিন  রেডিওকে  ম্যাককালাম জানান, সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে চায় ইংল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘দলের সব স্পিনারকে খেলাতে পিছপা  হবোনা  আমরা।’
হায়দারাবাদে অভিষেক টেস্টে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার টম হার্টলি। একাদশে একমাত্র পেসার হিসেবে হতাশাজনক পারফরমেন্স করেছেন মার্ক উড। ২৫ ওভার বল করে উইকেটশূণ্য ছিলেন তিনি। এ কারনে একাদশে বশিরের সুযোগের সম্ভাবনা বেশি বলে জানান ম্যাককালাম।
ম্যাককালাম বলেন, ‘আমরা কন্ডিশনের দিকে নজর রাখবো  এবং এরপর সিদ্বান্ত নিবো। আপনার সব সিদ্বান্তই  বিশেষ করে এখানে সঠিক হবে না।’
প্রথম টেস্টে ভারতের ২০ উইকেটের মধ্যে ১৮টি শিকার করেন ইংল্যান্ডের স্পিনাররা। বাকি দু’টি রান আউট হয়।  কন্ডিশন বিবেচনা করেই একাদশ সাজাবে ইংল্যান্ড।
ম্যাককালাম বলেন, ‘কিছু কিছু  উইকেট নিয়ে ধারনা করা কঠিন।  কিন্তু সব কিছু বিবেচনা করেই  আমরা  সিদ্ধান্ত নেবো  এবং সেভাবেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবো। তারপর দেখবো আমরা কেমন করতে পারি।’
ম্যাককালাম এবং অধিনায়ক স্টোকস একত্রে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘বাজবল’ ক্রিকেটের জন্ম দেন। ‘বাজবল’ ফর্মুলায় আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৯ টেস্টে ১৪টিতে জয়ে ইংল্যান্ডের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। 
ভারতের অনভিজ্ঞ টেস্ট ব্যাটিংকে বড় চিন্তার বিষয় বলে জানিয়েছেন দেশটির সাবেক স্পিনার হরভজন সিং। নিজের ইউটিউব  চ্যানেলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, রোহিত শর্মা আছে। কিন্তু পরবর্তী সর্বোচ্চ রানের মালিক (রবিচন্দ্রন) অশ্বিন।’
স্পিনং স্বর্গ হিসেবে  বিবেচিত হওয়াটাও স্বাগতিকদের বিপক্ষে কাজ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন হরভজন, ‘ভারতের ব্যাটিং লাইন আপকে দুর্বল দেখাচ্ছে। এই ব্যাটিং ইউনিট তরুণ, তাদের সময় দরকার এবং যদি তারা একটি ভাল উইকেট পায়, তাহলে ভাল পারফরমেন্স করতে পারে।’
হায়দারাবাদে কঠিন পরিস্থিতি কিভাবে সামলে খেলার গতিপথ পাল্টে দিতে হয়, সেটি করে দেখিয়েছেন ইংল্যান্ডের ওলি পোপ। 
উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বেন ফোকসের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১১২ রানের জুটি গড়েন পোপ। ফোকস ৩৪ ও পোপ ১৯৬ রানের ইনিংস খেলার পথে উইকেটের দু’পাশে সুইপ ও রিভার্স সুইপ শট খেলে ভারতীয় স্পিন আক্রমণকে অকেজো করে দেন তারা। 
ফোকস বলেন, ‘কতিপয়  খেলোয়াড়ের  বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা আছে যা এই উইকেটে ভাল কাজ করবে। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি সাপেক্ষে মানসিক পরিবর্তনই প্রধান হবে। কারণ এই পরিস্থিতিতে জয়ের জন্য বোলাররাই ফেভারিট। পূর্বে আউট হবার ভয়ে আমরা নিজেদের মেলে ধরতে পারতাম না। এই উইকেটে আউট হয়ে যাবার বিষয়টি মেনে নিয়ে মাঝে মাঝে নিজেকে মেলে ধরে খেলা এবং আধিপত্য বিস্তার করা সম্ভব।
২০১২ সালে অ্যালিস্টার কুকের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের কাছে সিরিজে হারের পর এখন পর্যন্ত ঘরের মাঠে অপরাজিত আছে ভারত।
তিন বছর আগে ইংল্যান্ডের শেষ সফরের সিরিজে প্রথম টেস্ট হারলেও, শেষ পর্যন্ত চার ম্যাচের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে জিতেছিলো ভারত।