বাসস
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩৩
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪১

প্রিমিয়ার লিগ: লিভারপুলকে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপার আশা টিকিয়ে রাখলো আর্সেনাল, উল্ফসের কাছে হেরেছে চেলসি

লন্ডন, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা দৌড়ে বড় বাঁধা পার করেছে আর্সেনাল। রোববার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এমিরেটস স্টেডিয়ামে টেবিল টপার লিভারপুলকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ছে গানার্সরা। দিনের আরেক ম্যাচে চেলসিকে ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে উল্ফস।
এই জয়ে লিভারপুলের থেকে পয়েন্টের ব্যবধান দুইয়ে নামিয়ে এনেছে আর্সেনাল। ম্যাচের আগে গানার্স বস মিকেল আর্তেতা স্বীকার করেছিলেন এফএ কাপে গত মাসে লিভারপুলের কাছে ২-০ গোলের পরাজয়ের পুনরাবৃত্তি হলে তার থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারবে না আর্সেনাল। কিন্তু শিরোপা দৌড়ে কোচকে হতাশ করেনি শিষ্যরা। কাপ ম্যাচের মতই প্রথম থেকে আধিপত্য দেখিয়েছে আর্সেনাল। কিন্তু এবার এগিয়ে গেছে তারাই। এ্যালিসন বেকার কেই হাভার্টজকে রুখে দেবার পর বুকায়ো সাকা স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধে একটি শটও টার্গেটে নিতে পারেনি লিভারপুল। কিন্তু স্টপেজ টাইমে লুইস দিয়াজের ক্রসে রক্ষনভাগের ভুলে গাব্রিয়েল মাগালেসের আত্মঘাতি গোলে সমতায় ফিরে রেডসরা। 
বিরতির পর এ্যালিসনের বিস্মকয়র ভুলে আবারো এগিয়ে যায় আর্সেনাল। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা পাস দেন গাব্রিয়েল মাগালেস। সেই বল ধরতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন এ্যালিসন। সামনে ছিলেন ভার্জিল ফন ডাইক। কিন্তু তিনিও বল ধরতে ব্যর্থ হলেও গাব্রিয়েল মার্টিনেলি খালি পোস্টে বল পাঠান। সমতায় ফিরতে লিভারপুল দলের মূল স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহর অনুপস্থিতি অনুভব করেছে। হাভার্টজকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের জন্য ৮৮ মিনিটে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ইব্রাকিমা কোনাতে। এই সুযোগে ডানদিক থেকে লিভারপুলের রক্ষনভাগের ফাঁকা জায়গাকে কাজে লাগিয়ে আরো এক গোল উপহার দেন লিনডো ট্রোসার্ড।
আর্তেতা বলেছেন, ‘আমরা যখনই সুযোগ পেয়েছি তা শতভাগ কাজে লাগিয়েছি। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় জয়। আমাদের আত্মবিশ^াস বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সত্যিই আনন্দিত।’

এদিকে আরো একবার হতাশাজনক পরাজয়ে সমর্থকদের কাছে দু:খ প্রকাশ করেছেন চেলসি বস মরিসিও পোচেত্তিনো। মাথিয়াস কুনহার হ্যাট্রিকে ১৯৭৯ সালের পর স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে প্রথমবারের মত জয় নিশ্চিত করেছে উল্ফস। ম্যাচ শেষে বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা ব্লুজদের লক্ষ্য করে দুয়ো ধ্বনি দিয়েছে। এই পরাজয়ে ১১তম স্থানে নেমে গেছে চেলসি। এর আগে বুধবার লিভারপুলের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল চেলসি। উল্ফসের কাছে পরাজয় তাদেরকে আরো বেশী লজ্জা দিয়ছে। 
১৯ মিনিটে মোয়েসিস কাইসেডোর পাসে কোল পালমার চেলসিকে এগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এই লিড মাত্র তিন মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। কুনহার শটে থিয়াগো সিলভার ডিফ্লেকটেড হয়ে চেলসি গোলরক্ষক ডোজি পেট্রোভিচকে পরাস্ত করলে উল্ফস সমতায় ফিরে। ৪৩ মিনিটে রায়ান এইত নুরির শট ডিফেন্ডার এ্যাক্সেল দিসাসির গায়ে লেগে আত্মঘাতি গোলের লজ্জা দেয় চেলসিকে। ৬৩ মিনিটে পেড্রো নেটোর এ্যাসিস্টে কুনহা উল্ফসকে তৃতীয় গোল উপহার দিলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গুস্তোর বিপক্ষে আদায় করা পেনাল্টি থেকে ৮২ মিনিটে কুনহা হ্যাট্রিক পূরণের পাশাপাশি দলের হয়ে চতুর্থ গোল করেন মালো । ৮৬ মিনিটে সিলভার গোল চেলসিকে শুধু সান্তনাই দিয়েছে।  
আগামী তিন ম্যাচের মধ্যে এফএ কাপে এ্যাস্টন ভিলা ও প্রিমিয়ার লিগে ক্রিস্টাল প্যালেস ও ম্যানচেস্টার সিটি মোকাবেলা করবে ব্লুজরা। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি লিগ কাপের ফাইনালে ওয়েম্বলিতে লিভারপুলের বিপক্ষে মুখোমুখি হবার আগে এই তিন ম্যাচের ফলাফল চেলসির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। 
আরেক ম্যাচে রাসমাস হোলান্ড ও আলেহান্দ্রো গারাঞ্চোর গোলে ওয়েস্ট হ্যামকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ১৪ ম্যাচে গোল করতে পারেননি হোলান্ড। কিন্তু শেষ চার ম্যাচে চার গোল করেছেন। ৪৯ ও ৮৪ মিনিটে জোড়া গোল করেছেন গারাঞ্চো। ইউনাইটেড বস এরিক টেন হাগ কলেছেন, ‘এই গোলগুলি তরুণ খেলোয়াড়দের ভবিষ্যত সম্ভাবনার প্রমান দেয়। তারা ক্রমেই প্রিমিয়ার লিগের মানের সাথে মানিয়ে নিচ্ছে। প্রতি ম্যাচেই তারা উন্নতি করছে।’
৭১ মিনিটে গুরুতর হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েছেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। যা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় পড়েছে ইউনাইটেড।