
ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে লিড নিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের ২৮৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ৩৩৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ফলে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৫২ রানে এগিয়ে টাইগাররা। ১৬৯ রানে অপরাজিত আছেন জয়।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করেছিল আয়ারল্যান্ড। ব্যারি ম্যাককার্থি ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় ওভারেও বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দশ নম্বরে নামা ম্যাথু হামফ্রিজকে রানের খাতা খুলতে দেননি তিনি।
শেষ ব্যাটার হিসেবে ম্যাককার্থিকে বোল্ড করে আয়ারল্যান্ডকে ২৮৬ রানে গুটিয়ে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। ৪টি চারে ৩১ রান করেন ম্যাককার্থি।
মেহেদি হাসান মিরাজ ৩টি, হাসান-তাইজুল ও অভিষিক্ত হাসান মুরাদ ২টি করে এবং নাহিদ রানা ১ উইকেট নেন।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংস শেষ হবার পর ব্যাট হাতে নেমে দারুণ শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম। ২১তম ওভারে দলের রান ১শতে নেন তারা। এসময় জয় পঞ্চম ও সাদমান সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন।
সেঞ্চুরির জুটির পরও আয়ারল্যান্ডের বোলারদের আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন জয় ও সাদমান। এতে ৩৬তম ওভারে দেড়শতে পৌঁছায় বাংলাদেশ। এই নিয়ে ষষ্ঠবার টেস্টে উদ্বোধনী জুুটিতে দেড়শ রান করল টাইগাররা। আগের পাঁচবার দেড়শ রানের জুটিতে অবদান ছিল ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবালের।
তবে দলীয় ১৬৮ রানে বিচ্ছিন্ন হন জয় ও সাদমান। আয়ারল্যান্ডের বাঁ-হাতি স্পিনার হামফ্রিজের বলে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারকে ক্যাচ দেন সাদমান। ৯ চার ও ১ ছক্কায় ১০৪ বলে ৮০ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন জয় ও সাদমান।
সাদমান ফেরার পর ক্রিজে আসেন মোমিনুল হক। জয়কে নিয়ে সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা ঘুরিয়েছেন মোমিনুল। চা-বিরতির পর বাংলাদেশের রান ২শ পার করে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন জয়। ২০২২ সালে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এরপর ৩০ ইনিংস সেঞ্চুরির দেখা পাননি জয়।
চার মেরে ১৯০ বলে সেঞ্চুরির স্বাদ নেওয়ার পর ইনিংস বড় করেছেন জয়। অন্যপ্রান্তে ইনিংস বড় করেছেন মোমিনুলও। ছক্কা মেরে ৭৪ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।
সাদমান-জয়ের পর মোমিনুলের হাফ-সেঞ্চুরিতে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটার হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিল। এর আগে প্রথমবার ২০১০ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটার হাফ-সেঞ্চুরির (তামিম ১০৩, ইমরুল কায়েস ৭৫ ও জুনায়েদ সিদ্দিকী ৭৪) স্বাদ নিয়েছিল।
মোমিনুলের হাফ-সেঞ্চুরির পর ক্যারিয়ারে প্রথমবার দেড়শ রানের কোটা স্পর্শ করেন জয়। ছক্কা মেরে ২৬৫ বলে দেড়শ রান পূর্ণ করেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ৮৫ ওভারে ১ উইকেটে ৩৩৮ রানে দিন শেষ করেন জয় ও মোমিনুল। ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৮৩ বলে ক্যারিয়ার সেরা ১৬৯ রানে অপরাজিত জয়। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১২৪ বলে ৮০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন মোমিনুল।