বাসস
  ২৮ জুলাই ২০২৪, ১৯:২২

বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসছে

ঢাকা, ২৮ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট সহিংসতা এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বন্দরসমূহে আমদানি-রপ্তানি এবং শুল্কায়ন কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তবে পরিস্থিরি উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ও ব্রডবন্ড ইন্টারনেট সেবা  চালু হওয়ায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে চট্টগ্রাম, মোংলা ও বেনাপোলসহ অন্যান্য বন্দর এবং কাস্টমসের কার্যক্রম। কাস্টমস হাউসে সার্ভারের মাধ্যমে শুল্কায়নসহ আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কাজ চলছে পুরোদমে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারিও বেড়েছে।
শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ট্রেইলার পণ্য নিতে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করছে। মালবোঝাই করে এগুলো চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আগের মতোই কর্মব্যস্ততা আর প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম। একই অবস্থা দেখা গেছে প্রধানতম স্থলবন্দর বেনাপোলে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান রোববার বাসসকে বলেন,স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাজ চলছে। বরং কাজ আগের চেয়ে আরও বেশি হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি, জাহাজীকরণ থেকে শুরু করে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় জমে থাকা কাজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত শুক্রবার ও শনিবার কাস্টমস কর্মকর্তারা অফিস করেছেন। বরং অন্য সময়ের চেয়ে এখন বন্দরের কর্মতৎপরতা বেশি বলে জানান তিনি। 
অপরদিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বাসসকে বলেন, বেনাপোল বন্দরের আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এখন বন্দরের সব কার্যক্রম অটোমেশন পদ্ধতিতে চলছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় যে পণ্যজট তৈরি হয়েছিলো, সেই জট খুলতে শুরু করেছে। 
গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাত থেকে চট্টগ্রামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। এর ফলে পাঁচ দিন পর অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত হয় কাস্টমস। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমেই মূলত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম হয়ে থাকে। শুরুতে ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় কাজকর্মে কিছুটা ধীরগতি থাকলেও শুক্রবার থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে।
বেশ কয়েকদিন শুল্কায়ন কার্যত বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে জমে গেছে বিপুল সংখ্যক কনটেইনার। একইভাবে বেসরকারি ডিপোগুলোতে জমে যায় রপ্তানি পণ্যের স্তুপ। কাজের গতি বাড়িয়ে এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে কাস্টমস।
ইন্টারনেট না থাকায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্কায়ন, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ডকুমেন্টেশন, পণ্যের ঘোষণা অনুযায়ী ইনস্পেকশন, কনটেইনার রাখার স্থান নির্ধারণ, ডিউটি আদায়সহ সব কার্যক্রম টানা পাঁচদিন স্থবির ছিল। নিজস্ব নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম সীমিতভাবে সচল রাখা হলেও শুল্কায়ন নথি না পৌঁছায় পণ্য ডেলিভারি ও জাহাজিকরণ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া সংঘাত ও কারফিউর কারণে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর অনেকটাই কাস্টমসের ওপর নির্ভরশীল। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর ছাড়পত্র পেলেই কেবল বন্দর থেকে পণ্য বের করার অনুমতি দেওয়া হয়। একইভাবে রপ্তানি পণ্যও শুল্কায়নের পর জাহাজে তোলা হয়। 
বন্দর সূত্র জানায়, ১৮ জুলাই রাতে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার পর বন্দরসমূহের কাস্টমসে শুল্কায়ন কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পচনশীল পণ্য খালাসের জন্য বেনাপোল বন্দরে ম্যানুয়ালি সীমিত পণ্যের শুল্কায়ন হয়। তবে এখন চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি ক্রমশ বাড়ছে। বেনাপোল বন্দরেও শত শত ট্রাক ভারত থেকে প্রবেশ করছে।