বাসস
  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ২১:৫৬

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট নিরসনে শনিবারও খোলা কাস্টম হাউস

চট্টগ্রাম, ১৬ আগস্ট ২০২৪ (বাসস) : ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে জুলাইয়ে অস্থিতিশীলতা ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অচল ছিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। কিন্তু এ সময় কনটেইনার উঠা-নামা পুরোদমে বন্ধ  থাকায় জট সৃষ্টি হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে পরিবহন সংকটে এ জট ক্রমশ বেড়ে ৮৫ শতাংশেরও বেশিতে রূপ নেয়। যা বর্তমানে মোট ধারণক্ষমতার ৭৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এ অবস্থায় জট নিরসনে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শনিবারও পুরোদমে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার ইমাম গাজ্জালী। 
তিনি বলেন, ‘কাস্টমসের সব কাজ অনেকটা অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে টানা পাঁচদিন পর ব্রডব্যান্ডসহ মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘœ ঘটে। প্রথমদিনে কিছু বিল অব এন্ট্রি থাকা চালানের কাজ ম্যানুয়ালি করলেও পরবর্তীতে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। ওই সময় বিল অব এন্টি ও বিল অব এক্সপোর্টের কাজ করা সম্ভব হয়নি। সেকারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে কনটেইনার জমে যায়। এ অবস্থায় ওয়ার্কিং ডে (কর্মদিবস) না বাড়িয়ে কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না। তাই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কমিশনার মহোদয় শনিবার (১৭ আগস্ট) পুরোদমে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।’
কাস্টম হাউস খোলা থাকলেও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় কাস্টমসের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকতো অন্য দপ্তর। আমরা তো তাদের খোলা রাখা বা বন্ধ রাখার ব্যাপারে কিছু বলতে পারি না। তবে এটি ঠিক যে তারা বন্ধ থাকায় আমাদের শুল্কায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব হবে না। এমনিতে পোর্টের জেটি বা ডিপোতে আমাদের কাজ তো ২৪/৭ (সার্বক্ষণিকভাবে) চালু থাকে। আমরাও একইভাবে হাউস খোলা রাখবো। এসময় পেন্ডিং (জমে থাকা) কাজগুলো এগিয়ে আনাসহ ডকুমেন্টেশনের কাজ এগিয়ে রাখবো।’
সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৫৩ হাজার ৫১৮টি। এরমধ্যে সর্বশেষ তথ্যে ৪০ হাজার ৫২৮টি কনটেইনার জমে আছে। যা মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বন্দরে ৪৩ হাজার ৫৭৮টি কনটেইনার জমে আছে বন্দরের ইয়ার্ডে। সোমবার (১২ আগস্ট) কনটেইনারের পরিমাণ ছিলো ৪৩ হাজার ৯৪১টি। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) কনটেইনার হ্যান্ডেল ৭ হাজার ৯৩০টি। আর কনটেইনার ডেলিভারি করে ৪ হাজার ৮০৭টি। 
এ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নিরাপত্তার অভাবে কাজের গতি কিছুটা কমেছে। কাস্টম হাউস (চট্টগ্রাম) খোলা রাখলে আমাদের ডেলিভারি সংক্রান্ত কাজে অনেকটুকু গতি বাড়বে। ব্যাংকিংয়ের কাজ না হলেও কনটেইনার জট নিরসনে এ সময় হাউস খোলা রাখাটা যথেষ্ট আন্তরিক সিদ্ধান্ত। একইভাবে বন্দর রিলেটেড ব্যাংকগুলো খোলা রাখা গেলেও ভালো হতো। তবে আমরা চাইলেও অন্য দপ্তরকে খোলা রাখার ব্যাপারে কথা বলতে পারি না। এছাড়া বন্দর দিনদিন কনটেইনার জট কমিয়ে আনছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক হলে আশা করি খুব অল্প সময়ে কন্টেইনার জটের বিষয়টি থাকবে না।’