বাসস
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২১

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে এডিবি ও মেঘনা গ্রুপের চুক্তি স্বাক্ষর


ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জ্বালানি সাশ্রয় ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে ২০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) অধীন তানভীর ডাল মিলস অ্যান্ড ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে একটি পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী আটা কারখানা স্থাপন করা হবে।

নতুন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এমজিআই’র আটা উৎপাদন বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণে উন্নীত হবে।  বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৩৭ শতাংশ। মানসম্পন্ন গমজাত পণ্যও উৎপাদনে সক্ষম হবে। চুক্তির আওতায় নির্মিত নতুন কারখানায় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জ্বালানি সাশ্রয় হবে। এতে কোম্পানির পরিচালন ব্যয়ও কমে আসবে। এছাড়া বার্ষিক প্রায় ৮ হাজার ২০০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এডিবি’র এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন কারখানায় ৬ লাখ ৬০ হাজার টন গম উৎপাদন সম্ভব হবে, যা দেশীয় কৃষি উৎপাদনে অবদান রাখার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রাইভেট সেক্টর অপারেশনসের মহাপরিচালক সুজান গ্যাবুরি বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের টেকসই শিল্প উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জ্বালানি-সাশ্রয়ী প্রযুক্তির প্রচার এবং পণ্যের গুণগত মান উন্নত করার মাধ্যমে এডিবি ও এমজিআই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও পরিবেশগত সুরক্ষায় অবদান রাখবে। এছাড়াও, প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের গার্হস্থ্য কৃষি-প্রক্রিয়াকরণকে শক্তিশালী করা এবং গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলির জ্বালানি চাহিদার তীব্রতা হ্রাস করার লক্ষ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এ বিষয়ে এমজিআই’র চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফা কামাল বলেন, প্রকল্পটি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ১৬০ জনের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এটি এসএমই খাতের প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার বিক্রেতার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবে। ফলে নতুন বাজার সৃষ্টি ও শিল্পায়নেও অবদান রাখবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টেকসই জিডিপি বৃদ্ধির সহায়ক হবে।বাংলাদেশে গমের চাহিদা ক্রমাগত বাড়লেও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে সেই গতি নেই। ২০২২ সালে, দেশটি প্রায় ৮.৮ মিলিয়ন টন গমের চাহিদা থাকলেও স্থানীয় উৎপাদন মাত্র এক মিলিয়ন টনের কিছু বেশি। আমদানি করা গমের উপর এই নির্ভরতা অভ্যন্তরীণ মিলিং ক্ষমতা সম্প্রসারণের জরুরি প্রয়োজনকে তুলে ধরে। ময়দা মিলিংয়ের চাহিদার প্রত্যাশিত বৃদ্ধির সাথে, জ্বালানিদক্ষ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এই সেক্টরে পরিবেশগত টেকসই বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে।

এমজিআই-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রকল্পটি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ১৬০ জনের জন্য অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে, এসএমই সেক্টরে ১ লাখ ৫০হাজার বিক্রেতার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলবে, বাজার সৃষ্টি ও শিল্পায়নে সহায়তা করবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টেকসই জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’ কামাল বলেন, ‘আমরা এডিবি-এর সাথে কাজ করতে উৎসাহী।’

১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এমজিআই ভোগ্যপণ্য, ভবন উপকরণ, রাসায়নিক উপকরন, জ্বালানি, প্যাকেজিং ও লজিস্টিকস এর মতো বিচিত্রধর্মী খাতে উৎপাদন ও ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।

১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, এডিবি অতি দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৮ জন সদস্যের মালিকানাধীন এডিবির ৪৯ জন এই অঞ্চলের।