শিরোনাম
শেরপুর, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলার শ্রীবরদি উপজেলার বৃহৎ হাটে প্রতিদিন ৩০ লাখ টাকার কলা বিক্রি হয়। সকাল ১০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই হাট। এই হাটের বিভিন্ন জাতের কলা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিক্রির জন্য চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
জানা যায়, শ্রীবরদি উপজেলার বৃহৎ এই কলার হাট চৌকিদার বাড়ি মোড়ের হাট হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালে এই হাট ছোট পরিসরে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এটি জেলার বৃহৎ কলার হাট। এই হাটে প্রতিদিন গড়ে ২৮ থেকে ৩০ লাখ টাকার কলা বিক্রি হয়। এসব কলা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য চলে যায়।
পাশাপাশি এই হাটের কলা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে পিকআপ ভ্যানে করে পৌছে যায় ঢাকা, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিলেট, জামালপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
কলা চাষীরা জানান,অন্যান্য ফসলের তুলনায় অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন জেলার কৃষকরা। বিশেষ করে অনেক বেকার যুবক অন্যের জমি লিজ (ভাড়া) নিয়ে কলা চাষ করে ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা।
জেলায় সাগর, চাম্পা, চিনি চাম্পা, নেপালী ও সবরি কলার চাষ বেশি হয়। এছাড়া জেলার সদর, নকলা, শ্রীবরদি ও ঝিনাইগাতি উপজেলার অঞ্চলের মাটি উপযোগী হওয়ায় কলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে। অনেক কৃষকের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এসেছে কলা চাষে।
উপজেলার ভেলুয়া গ্রামের কলাচাষী জুলহাস মিয়া (৫০) জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ৪শ থেকে ৫শ টি কলাগাছ রোপণ করা হয়। একটি কলা গাছে রোপণ থেকে বাজার জাত পর্যন্ত ১৫০ থেকে ২০০ টাকা খরচ হয়। হাটে প্রতিটি কলার ছড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া কলা চাষে সেচ, সার ও শ্রমিকের প্রয়োজন না হওয়ায় অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উপজেলার তাতিহাটির কলা চাষী শরাফত মিয়া (৪৮) বলেন, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন কলা চাষী ও বিক্রেতা এই হাটে আসেন। শেরপুর জেলার মাটি কলা চাষে উপযোগী। তাই বেকার যুবকদের চাকরির পিছনে না ছুটে কলা চাষে আগ্রহ বাড়ালে একদিকে যেমন নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারবে অন্যদিকে বেকারত্ব দূর হবে।
এবিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো.হুমায়ুন কবীর বাসস'কে বলেন, জেলার ৫ উপজেলায় এবছর ৪৮৫ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে।
কলা চাষে বিঘা প্রতি খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং খরচ বাদে প্রতি বিঘায় লাভ থাকে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। এছাড়া কলা গাছ থেকে কলার ছড়ি সংগ্রহ করার পর সেই গাছ থেকে ৯ থেকে ১০টি চারা গজায়। সেই চারা বিক্রি করেও বাড়তি লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমরা কলা চাষীদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করছি। পাশাপাশি উপজেলা কৃষি বিভাগের সকল উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কলা চাষীদের আধুনিক কলা চাষের বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছে।