পুঁজিবাজারে ইনভেস্টমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে স্টেকহোল্ডারের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন

বাসস
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৫৮
ছবি : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ জনসংযোগ দপ্তর

ঢাকা, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন বলেছেন, দেশের পুঁজিবাজারে একটি সম্পূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সকল স্টেকহোল্ডারের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি অপরিহার্য। 

তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত দিক থেকে বর্তমান অবস্থা, কাঠামোগত ঘাটতি এবং জবাবদিহিতার জায়গাগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। তথ্য প্রকাশে স্বচ্ছতা এখনও পুঁজিবাজারের বড় চ্যালেঞ্জ। যা বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় ফেলেছে।

বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ-২০২৫-এর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন এবং সিডিবিএল যৌথভাবে ‘উদীয়মান প্রযুক্তি ও ডিজিটাল অর্থায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন এসব কথা বলেন। 

ডিবিএ-এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান।

বিএসইসি কমিশনার বলেন, পুঁজিবাজারের প্রযুক্তিগত কাঠামোতে এক্সচেঞ্জ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডার যেমন সিডিবিএল, সিসিবিএল রয়েছে। কিন্তু যথাযথ যোগাযোগ ও সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এখন সময় এসেছে সব প্রতিষ্ঠান একসাথে সমন্বয় করে কাজ করার।

তিনি বিএসইসির এক্সটেন্ডেড বিজনেস রিপোর্টিং মডেল (এসবিআরএম) ফরম্যাটে আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেশিন-রিডেবল ফরম্যাট, যা আইএফআরএস স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি। এর মাধ্যমে গবেষণা, বিশ্লেষণ এবং নজরদারি সহজ হবে। তবে এর সফল বাস্তবায়নের জন্য অডিটরসহ সকল স্টেকহোল্ডারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশনের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন মানে শুধু নতুন পণ্য নয়, বরং বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ সৃষ্টি করা, যেখানে মানুষ তার ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি দেখতে পারবে। বর্তমানে বাজারের অংশগ্রহণ কমছে, ফলে সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে। যারা পুঁজিবাজারে আছেন তাদের সম্পদ বাড়ছে না, বরং বাজারের আকার বছরে প্রায় ৩ শতাংশ হারে সঙ্কুচিত হচ্ছে, যা দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির বিপরীত।

কমিশনার আরও বলেন, প্রযুক্তি আমাদেরকে নতুনভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ দিয়েছে। আগে যেসব কাজে সীমাবদ্ধতা ছিল, আজ তা সম্ভব। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্‌ম ও আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে যদি আমরা উদ্যোগ নিই, তাহলে পুরো কাঠামো বদলানো সম্ভব। আসুন, সবাই মিলে এটি বাস্তবায়ন করি।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে। সাথে সাথে বাজারে দক্ষতা ও স্বচ্ছতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা প্রযুক্তিতে বড় বিনিয়োগ করেছি, কিন্তু তার সুফল এখনো পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। প্রধান কারণে হল পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সম্বয়ের অভাব।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক খাত ও পুঁজিবাজারের প্রযুক্তি আর্কিটেক্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, যদি তথ্য প্রবাহ অবাধ না থাকে, প্রযুক্তি সেই পদক্ষেপের সব কিছু সঠিকভাবে সিস্টেমে ধরতে পারে না। ফলস্বরূপ, অনিচ্ছাকৃত ননকমপ্লায়েন্সের ঘটনা ঘটছে। এই সমস্যার সমাধানে আমাদের কাজ করার বড় সুযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করলেও রিপোর্টিং ও মনিটরিং সিস্টেম আরও শক্তিশালী করতে হবে।

ডিএসই পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ কামরুজ্জাান সমাপনী বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে নিজস্ব দক্ষতা তৈরি করতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে এ কাজে যুক্ত করতে হবে, যা দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ডিসেম্বর পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের অনুরোধ কৃষি উপদেষ্টার
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক শাহেদ আলীর জন্মশতবর্ষ  উপলক্ষে সুনামগঞ্জে আলোচনা সভা
ত্রি-মাত্রিক বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অর্থায়নের আহ্বান বাংলাদেশের
তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে গোপালগঞ্জে বিএনপি’র আনন্দ মিছিল
নরসিংদীতে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
ঢাকা বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ স্পাই ডিভাইসসহ আটক ২
দেশের মানুষ গণতন্ত্রের সু-বাতাস পাওয়া শুরু করেছে : সুলতান সালাউদ্দিন টুকু
নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে সরাসরি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে প্রার্থীদের
বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
কিছুদিন পরে হয়তো বলবে তারাই একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা : সালাহউদ্দিন
১০