চট্টগ্রাম, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে মাসব্যাপী চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (সিআইটিএফ) ২০২৩ আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পলোগ্রাউন্ডে শুরু হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন।
৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৩ উপলক্ষে আজ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেলা কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম আকতার হোসেন লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানান। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য এমএ লতিফ এমপি এবং দি ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্র্রি’র (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চেম্বার সভাপতি ও সিআইটিএফ কমিটির উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম, সহ-সভাপতি ও সিআইটিএফ কমিটির উপদেষ্টা  সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর এবং মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ। 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার চট্টগ্রাম রেলওয়ের পলোগ্রাউন্ডে প্রায় ৪ লক্ষ বর্গফুট জায়গা নিয়ে মেলার আয়োজন করা হবে। মাসব্যাপী এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। 
মাঠের উত্তর-পশ্চিম কর্নারে বিশাল জায়গাজুড়ে পুরুষদের জন্য মসজিদ ও দক্ষিণ-পূর্ব কর্নারে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 
নগরীর বিভিন্ন স্কুলের প্লে থেকে ৭ম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে টিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে- যা মাসজুড়ে পুরো মেলায় ব্যবহার করা যাবে। মেলায় ২০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫৬টি প্রিমিয়ার স্টল, ৯৪টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১১টি ফুড স্টল ও ৩টি আলাদা জোন নিয়ে মোট ৪০০টি স্টলে ৩০০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এবার নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশ, যেমন- ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরান বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। 
মেলা কমিটির চেয়ারম্যান জানান, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, সন্ধানী, চট্টগ্রাম বধির ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবং রাউজান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আরআইটি)-কে বিনামূল্যে একটি করে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। 
অংশগ্রহণকারী ও আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যরা মেলা প্রাঙ্গণে তিন শিফটে বিভক্ত হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণও বিশেষভাবে নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে সুদক্ষ প্রাইভেট সিকিউরিটির সদস্যগণ চব্বিশ ঘণ্টা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। অনাকাংক্সিক্ষত দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক অগ্নি-নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গাড়িসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম মেলা চলাকালীন সময়ে সর্বদা মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থান করবে। 
নতুন সংযোজন হিসেবে এবার শিশুদের বিনোদনের জন্য মাঠের দক্ষিণ পাশে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা  হয়েছে। 
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মেলা শুধু বাণিজ্যের স্থান নয়, এটা নগর জীবনে একে অন্যের সাথে মেলবন্ধনের একটি সুযোগ। তাই বসার সুবিধাসহ ফোয়ারা সমৃদ্ধ ১২ হাজার ৩২০ বর্গফুট জুড়ে একটি ওপেন প্লাজা রাখা হয়েছে। মেলা চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারবৃন্দ মেলা পরিদর্শন করবেন। এতে করে সেসব দেশে আমাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এই মেলা পরিদর্শন করবেন যা দেশীয় শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে। 
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নারী ও পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা-আলাদা টয়লেটের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। 
মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় স্টল, প্যাভিলিয়ন ও দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী নির্বাচন করে বিশেষ পদক এবং সনদপত্র প্রদান করা হবে।