রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার ভূমিকা আশা করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৫৪
মালয়েশিয়ার জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামা’কে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৭ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে দেশটির ভূমিকা কাজে লাগাতে চাইছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও আসিয়ানে নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান একযোগে দেশটিকে একটি অনন্য অবস্থানে রেখেছে। এ বিষয়টি একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হতে পারে।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামা’কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। এই সাক্ষাৎকারটি কুয়ালালামপুরে প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্রীয় সফরের সময় নেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া সমস্ত আলোচনায় (রোহিঙ্গা ইস্যুতে) তার প্রভাব কাজে লাগাবে, যাতে আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারি।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সতর্ক করে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে শরণার্থী সংকট গভীর হয়েছে। এর ফলে রোহিঙ্গারা নতুন করে বাংলাদেশে পাড়ি দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, গত ১৮ মাসে দেশে দেড় লাখ নতুন রোহিঙ্গা এসেছেন। এরই মধ্যে দেশে থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে তারা যুক্ত হয়েছেন । এ সমস্যা ক্রমেই আরও জটিল হচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহায়তা তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী মাসগুলোতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যাতে টেকসই সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়।

এর মধ্যে প্রথমটি এই মাসের শেষ দিকে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে, যা বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার অষ্টম বার্ষিকীর সময়ের সঙ্গে মিল রেখে আয়োজন করা হচ্ছে। আট বছর আগে এ সময় থেকেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয় দিতে শুরু করে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চস্তরের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভার ফাঁকে এবং তৃতীয়টি বছরের শেষদিকে কাতারের দোহায় আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগে খুব কমই অগ্রগতি হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারের চলমান সশস্ত্র সংঘাতের কারণে এটি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

দীর্ঘস্থায়ী এ মানবিক সংকট শুধু বাংলাদেশকেই প্রভাবিত করছে না, বরং মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি আসিয়ান সদস্য দেশকে প্রভাবিত করছে।

মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলের স্বাক্ষরকারী না হলেও মানবিক কারণে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিচ্ছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করার পর রোহিঙ্গা সংকটের সূচনা হয়। এ অভিযানের জেরে প্রাণ বাঁচাতে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নওগাঁয় সহযাত্রীকে অজ্ঞান করে মালামাল লুটের ঘটনায় আটক ১
ইসলাম ও দেশের প্রয়োজনে যুবসমাজের প্রতি ঐক্যের আহ্বান
পাহাড়ে শান্তি ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন রাশেদ খান
বান্দরবানে কেওক্রাডং পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে 
সুনামগঞ্জের ১০টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা কয়ছর
কুমিল্লার মণ্ডপে মণ্ডপে বিএনপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা বিনিময় 
রিমান্ড শেষে কারাগারে নড়াইলের সাবেক এমপি মুক্তি
আওয়ামী লীগ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে: ডা. জাহিদ 
যশোরে বজ্রপাতে বিএনপি নেতাসহ দুইজনের মৃত্যু
ঢাকেশ্বরী ও রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন করলেন বিজিবি মহাপরিচালক
১০