বাসস
  ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৪২

মুজিবনগরে বিনোদন প্রেমিদের উপচেপড়া ভিড়

॥ দিলরুবা খাতুন ॥
মেহেরপুর, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস) : বিনোদনের সাথে স্বাধীনতার পূণ্যভূমি ছুঁয়ে দেখতে মেহেরপুরের মুজিবনগরে উপচে পড়ছে ভিড়।  গরম আর রোদ উপেক্ষা করে মুজিবনগরে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।  যেখানে দাঁড়িয়ে  ‘একনজরে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ’  দেখা যায় সেখানে থেকে মুজিবনগর কমপ্লেক্স বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষে ভরে আছে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত অগণিত মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে থাকছে। এ ভিড় আগামী শনিবার পর্যন্ত থাকবে এমনটা জানান মুজিবনগর উপজেলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।  স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর বিনোদন পিপাসুদের আকর্ষণের অন্যতম জায়গা ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে একদিনের জন্য হলেও বিনোদনের প্রত্যাশার সাথে যেখানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিলো সেই স্থান দেখতে  বাস-ট্রাক, মোটর সাইকেল, নছিমন, করিমন, আলমসাধুযোগে ও ব্যক্তিগত কার ও মোটরসাইকেল যোগে মুজিবনগরে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। স্থানীয় দর্শনার্থী ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মাইক, ব্যান্ড ও ভেঁপু বাজিয়ে ছুটে আসছে মানুষ।    এসব মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে মুজিবনগর কমপ্লেক্স। করোনার খরা কাটিয়ে উঠে মুজিবনগর যেন সেজেছে আপন মহিমায়।
মুজিবনগরে বিশাল আ¤্রকানন ও পার্শ্ববর্তী এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন œভাস্কর্য, সরকারি শিশু পরিবার, ছয়স্তরবিশিষ্ট গোলাপ বাগান, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা শহরের কাপড় ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিনোদনের জন্য সপরিবারে এখানে ঘুরতে এসেছি। সন্তানদের দেশের স্বাধীনতা ও সেক্টরভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে পারছি। তাই খুব ভালো লাগছে।  চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে নানাবাড়ি ঈদ করতে এসেছেন শাহীন। সোমবার মুজিবনগর এসেছেন বিনোদনের জন্য  । তিনি বলেন, শুনেছি ঐতিহাসিক মুজিবনগরের কথা। আজ চোখে দেখলাম। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের পাকিস্তানিরা যে নির্যাতন করেছে নিরীহ বাঙালির ওপর সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে ভাস্কর্যের মাধ্যমে। ভালো লাগলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পেরে।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি রাসেল বলেন, প্রায় প্রতিবারই মুজিবনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় দর্শনার্থীদের প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটে। তবে এবার রাস্তায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সাদা পোশাকেও কমপেক্সের ভিতর পুলিশের নজরদারি আছে। এছাড়া, নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন ৬৩ জন আনসার সদস্য। আছে ট্যুরিস্ট পুলিশও।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী  মেহেরপুর-১ আসনের এমপি ফরহাদ হোসেন  জানান, আন্তর্জাতিকমানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে মুজিবনগরকে গড়ে তোলার জন্য ত্রিমাত্রিক নকশা করা হয়েছে।  এরই মধ্যে ৪১০ কোটি টাকার প্রি-অনুমোদন হয়ে গেছে। সামনে অর্থ বছরেই আশা করছি একনেকে ফাইনাল অনুমোদন হয়ে যাবে। এছাড়া, মোট এক হাজার কোটির টাকার কাজ হবে শুধু মুজিবনগর কমপ্লেক্সেই। তখন আরও দর্শক নন্দিত হবে মুজিবনগর।