বাসস
  ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ২০:২৬

গবেষণায় আগাম রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জানা যাবে : বিএসএমএমইউ উপাচার্য

ঢাকা, ৭ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা এমনভাবে গবেষণা করব যাতে আগাম রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জানতে পারি। আর এসব গবেষণার কাজে তরুণদের অনুপ্রেরণা দিতে হবে। 
তিনি বলেন, তরুণ গবেষকদের হাতে আমরা নিরাপদ থাকতে চাই। তরুণ নবীন রেসিডেন্টদের গবেষণার হাত ধরেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে ফিজিওলজি বিভাগের উদ্যোগে ‘শরীরের নিম্নাংশের চর্বি কেন ডায়বেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে?’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, শিগগিরই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণার কাজ শুরু করবে বিএসএমএমইউ। তাদের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক  আলোচনা হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ‘রিসার্চ ইনোভেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ সেন্টারের মাধ্যমে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। 
সেমিনারে উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রত্যেক গবেষণার উদ্দেশ্য রোগ প্রতিরোধ করা। গবেষণার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি যেন জনস্বার্থ সম্পৃক্ত হয়। যারা ফ্যাকাল্টি আছেন তারা গবেষণা করবেন। যারা গবেষণা করছেন তাদের গাইড দেবেন। কোভিডের সময় অনেক গবেষণা করেছি। সারা বিশ্বেও হাজার গবেষণা হয়েছে। আমাদের গবেষণার ফল অনেক রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবা দেবার সময় কাজেও লেগেছে। ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়েও আমাদের গবেষণা চলছে। 
সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে বলা হয়, দেহের নিতম্ব অংশের চর্বিকোষ পেটের চর্বিকোষ থেকে আলাদা। টাইপ-২ ডায়বেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি পেটের চর্বিকোষ বাড়ায়, কিন্তু নিতম্বের চর্বিকোষ ঝুঁকি কমায়। গবেষণার লক্ষ্য ছিল, আধুনিক প্রযুক্তি প্রোটেওমিক্স এন্ড জেনোমিকস টেকনিক ব্যবহার করে এটা জানার চেষ্টা করা যে কীভাবে এই পার্থক্যটা হচ্ছে। 
গবষেণায় প্রথমে ৬ জন সুস্থ নারীর পেট ও নিতম্বদেশের চর্বিকোষ নেয়া হয়। তাতে বিদ্যমান প্রোটিনগুলো আলাদা করা হয়: টু ডাইমেনশনাল জেল ইলেক্ট্রোফ্রোরেসিস জিস টেনডেম ম্যাস স্পেকট্রোমেট্রি করে।  ট্রান্সক্রিপটোমিক প্রোফাইলস এসসি-আরএনএসেক জিস ইমিউনোহিস্টকেমেস্ট্রি দিয়ে স্যাম্পলগুলো ফলোআপ করা হয়। এতে পেটের চর্বির তুলনায় নিতম্বের চর্বিতে ১৩১টি প্রোটিন পরিমাণে দ্বিগুণ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে হ্যাপ্টোগ্লোবিন প্রোটিন পাওয়া যায় ১৮ গুণ বেশি। অধিকতর বিশ্লেষণ করে আরও অনেকগুলো প্রোটিন পাওয়া গেছে নিতম্বের চর্বিতে, যা বিক্রিয়াজনিত ক্ষয় রিডক্স এনড অক্সিডেটিভ এটাক প্রতিরোধ করে। এই গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলে জানা গেছে, নিতম্বে হ্যাপ্টোগ্লোবিন বেশি উৎপন্ন হয়, যা প্রহরীর কাজ করে নতুন চর্বিকোষের জন্য। কোষে কোষে বিক্রিয়াজনিত ক্ষয় প্রতিরোধ করে ডায়বেটিস ও হৃদরোগ রোধে কাজ করে।
সেমিনারে সুইডেনের উপসালার এনকোপিং হাসপাতালের ডায়বেটিস ও এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেফতুন আহমেদ খন্দকার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাসকিনা আলী। 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউয়ের এন্ড্রোক্রাইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ হাসনাত।