বাসস
  ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ২০:৪৪

বিএসএমএমইউতে বিশ্ব অপরিণত দিবস ও বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালিত

ঢাকা, ৯ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব অপরিণত দিবস-২০২৩ ও বিশ্ব নিউমোনিয়ায় দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে।  
আজ শহীদ ডা. মিলন হলে দিবস দুটি উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে নিওন্যাটোলোজি বিভাগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে নিওন্যাটোলোজি বিভাগের ইয়ারবুক-২০২৩ ও নিওন্যাটোলোজি ফলোআপ বুকের শুভ উদ্বোধন করা হয়। নিওন্যাটোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম সবুজ প্রিম্যাচুরিটি ও শিশু বিভাগের শিশু  পালমোলোজি ডিভিশনের সহকারী অধ্যাপক ডা. সীমা ভদ্র নিউমোনিয়ার উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে প্যানেল অব এক্সপার্ট বিসিপিএস এর সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সঞ্চয় কুমার দে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো: শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানামুখী উদ্যোগের কারণে দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভাল চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এজন্য এখানে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  
সেমিনারে জানানো হয়, দেশে বর্তমানে প্রতি বছর ৫ লাখ ৭৩ হাজার জন প্রিমিচুরড বা অপরিণত শিশু জন্মগ্রহণ করে যা ১৯ দশমিক ১ শতাংশ । এই অপরিণত শিশু ও  অল্প ওজনের বাচ্চার মৃত্যু অনুর্ধ্ব ৫ বছরের শিশুর মৃত্যুর হার ২২ শতাংশ। বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিএস অর্জন করতে হলে বর্তমান অনুর্ধ্ব ৫ বছরের বর্তমান শিশুর মৃত্যুর প্রতি হাজারে ৩১ জন থেকে ২৫ জনে, নিওন্যাটাল মৃত্যু নামাতে হবে প্রতিহাজারে ২০ থেকে ১২ জনে। মনে রাখতে হবে, বর্তমানে এই প্রিম্যাচুর মৃত্যু হার কমাতে হলে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে এন্টিন্যাটাল সেস্টিকসটিরিয়ড, ক্যাঙ্গারু মাথার কেয়ার (কেএমসি) এবং  অসুস্থ শিশুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা। সরকার অপরিণত শিশুর যতœ নেবার জন্য স্ক্যানো এবং ক্যাঙ্গারু মাথার কেয়ার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সেমিনারে আরো বলা হয়, নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যায়। বাংলাদেশে প্রতিবছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় ২৬ হাজার ৭৬৬ জন। এদের সবার বয়স ৫ বছরের নীচ। এই বয়সী মোট শিশুর মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ। নিউমোনিয়া আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা, ও প্রতিকার পাওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার  অঙ্গ সংগঠনগুলো, গ্লোবাল এ্যাকশন প্ল্যান ফর প্রিভেনশন এন্ড কন্ট্রোল নিউমোনিয়া এন্ড ডাইরিয়া (জিএপিএডি) গঠন করা হয়। এর আওতায় কিভাবে শিশুর নিউমোনিয়া ও ডাইরিয়া থেকে প্রতিকার ও রক্ষা পাওয়া যায় তার একটা নীতিমালা করা হয়েছে এবং আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের নীচের বাচ্চাদের নিউমোনিয়া জনিত মৃত্যুর হার প্রতি- ১০০০ জনে ৩ জনের কম নিশ্চিত করার লক্ষ্য স্থির করা হয় যা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। প্রয়াসের মধ্যে অন্যতম হলো প্রতিটি বাচ্চাকে জন্মের প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। ছয় মাসের পর বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য সম্পূরক খাবার দিতে হবে। শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়াতে হবে। প্রতিটি শিশুকে টিকা দিতে হবে। ঘরে ও ঘরের বাইরে বায়ুদূষণ কমাতে হবে। শিশুরা অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে শিশুর মৃত্যু হার কমানো যাবে।