বাসস
  ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৪:২৮

হিরোশিমায় বোমা হামলার স্মরণ; একটি ‘বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি’

টোকিও, ৬ আগস্ট, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): জাপানের হিরোশিমা শহর ধ্বংসকারী পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৯তম বার্ষিকীতে মঙ্গলবার হিরোশিমার মেয়র বলেছেন, ইউক্রেন এবং গাজার যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী ভয় ও অবিশ্বাসকে গভীরতর করছে।
কাজুমি মাতসুই ৬ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে মার্কিন পারমাণবিক হামলার শিকারদের স্মরণে একটি স্মারক অনুষ্ঠানে এক বেদনাদায়ক বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
এই পারমাণবিক বোমা হামলায় প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী আগ্রাসন এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি অগণিত নিরপরাধ মানুষ জীবন হারিয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করছে।’
‘এই বৈশ্বিক ট্র্যাজেডিগুলো বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস এবং ভয়কে আরও গভীর করে তুলছে। জনসাধারণের ধারণাকে শক্তিশালী করছে যে আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সামরিক শক্তির উপর নির্ভর করতে হবে। যা আমাদের প্রত্যাখ্যান করা উচিত।’
১৯৪৫ সালের হিরোশিমা হামলার কয়েকদিন পর, দ্বিতীয় মার্কিন পরমাণু বোমা দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের নাগাসাকিতে আঘাত হানে। এতে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ মারা যায়।
দ’ুটি হামলার ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং আজ পর্যন্ত জাপানই একমাত্র দেশ যেটি যুদ্ধকালীন সময় পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েছে। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সকলেই কালো স্যুট পরিহিত ছিলেন। তারা গভীরভাবে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানান। তারা ‘শান্তিতে বিশ্রাম’ শিলালিপি বিশিষ্ট স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আজ হিরোশিমা ১২ লক্ষ লোকের একটি সমৃদ্ধ মহানগর। কিন্তু, একটি গম্বুজ ভবনের ধ্বংসাবশেষ শহরের কেন্দ্রস্থলে হামলার ভয়াবহতার একটি অনুস্মারক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।
ইউক্রেন সংকটের কারণে তৃতীয় বছরে রাশিয়া ও বেলারুশকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
গত বছর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু করার পর এটি ছিল শহরের প্রথম শান্তি স্মারক।
ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত যথারীতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে হিরোশিমা কখনও ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানায়নি।
গত মাসে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ জাপানে ফিলিস্তিনের স্থায়ী জেনারেল মিশন বলেন, ‘ফিলিস্তিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, এটি দুঃখজনক।’
শহরের একজন কর্মকর্তা জুন মাসে এএফপি’কে বলেছিলেন, হিরোশিমা ইসরায়েলকে তার আমন্ত্রণ পত্রে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধবিরতি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের’ আহ্বান জানিয়েছে।
তবে এ বছর নাগাসাকি শান্তি অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানায়নি।
নাগাসাকি বলেছে, যে সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, বরং কোন অপ্রত্যাশিত ঝামেলা এড়াতে নেওয়া হয়েছে।