ঢাকা, ১৯ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : কানাডায় দাবানলে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৬ লাখ একর (৫৫ লাখ হেক্টর) জমি পুড়ে গেছে। যা আয়তনে প্রায় ক্রোয়েশিয়ার সমান। শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
মন্ট্রিল থেকে এএফপি জানিয়েছে, গত ২০২৩ সালে কানাডার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে ৪ কোটি ২৯ লাখ একর এলাকা পুড়ে গিয়েছিল। সেই নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর কানাডায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার দাবানলের ঘটনা গণনা করেছে। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত ৫৬১টিতে আগুন সক্রিয় ছিল।
কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাইকেল নর্টন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বছরের এই সময়ের হিসেবে পুড়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ২০২৩ সালের পর এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।’
তবে তিনি জানান, ২০২৩ সালে দাবানলের তীব্রতা থামেনি। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি তুলনামূলক স্বাভাবিক রয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৮৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কানাডার দ্বিতীয় ভয়াবহ দাবানলের বছর ছিল ১৯৯৫ সাল। সে বছর ১ কোটি ৭৫ লাখ একর জমি আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। চলতি বছর সেই রেকর্ড অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি বসন্তে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ও শুষ্ক আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে, বিশেষ করে ম্যানিটোবা ও সাসকাচোয়ান প্রদেশে।
জুনে আগুন কিছুটা কমলেও কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলছেন, আগামী দুই মাস কানাডায় দাবানলের সবচেয়ে সক্রিয় সময়। এই সময় আরও কয়েকটি এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অন্যতম।
এ বছর এখন পর্যন্ত কানাডার আদিবাসীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ পর্যন্ত ‘ফার্স্ট নেশন’ গোষ্ঠীর ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কানাডার তাপমাত্রা দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার ফলে তুষারপাত কমে যায়, শীতকাল কম এবং হালকা হয় এবং গ্রীষ্মের শুরুর দিকে পরিস্থিতি দাবানলের জন্য সহায়ক হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে তুষারপাত কমে যাচ্ছে, শীতকাল ছোট ও মৃদু হয়ে উঠছে এবং আগুন লাগার উপযোগী আবহাওয়া দ্রুত চলে আসছে। যা দাবানলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।