গাজায় ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ইসরাইলি হামলায় ৩৯ ফিলিস্তিনী নিহত 

বাসস
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৩

ঢাকা, ২০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৩৯ জন নিহত ও একশ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। 

শনিবার দু’টি ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে বলে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে। খবর এএফপি’র।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, গাজার খান ইউনিসের দক্ষিণ-পশ্চিম ও রাফাহর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত দু’টি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে’ এসব মানুষ প্রাণ হারান।

গাজায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনীদের লক্ষ্য করে ইসরাইলী হামলা এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনার জন্য বরাবরই ইসরাইলি বাহিনীকে দায়ী করে আসছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোর হওয়ার আগে তিনি পাঁচ আত্মীয়কে নিয়ে খান ইউনিসের আল-তিনা এলাকায় ত্রাণ নিতে যান। তখন ‘ইসরাইলি সেনারা গুলি চালায়’।

৩৭ বছর বয়সী আবদুল আজিজ আবেদ বলেন, ‘আমরা কেউই ত্রাণ পাইনি। প্রতিদিন যাই, আর ফিরে আসি গুলি আর হতাশা নিয়ে।’

আরও তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীও সেনাদের গুলি চালানোর অভিযোগ করেছেন।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, রাফাহ এলাকায় অভিযানের সময় কিছু লোক সেনাদের দিকে এগিয়ে এলে তারা হুমকি অনুভব করেন। সরে যেতে বলার পরও কেউ না সরায়, সতর্কতামূলক গুলি চালানো হয়।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাটি তদন্তাধীন। তারা জানায়, গভীর রাতে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গুলি ছোড়া হয়েছিল। তখন সেখানে কোনো কার্যক্রম চলছিল না।

এদিকে গাজার নুসাইরাত এলাকার এক বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় আরও ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল ডিফেন্স।

তবে গাজায় গণমাধ্যমের কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ ও বহু এলাকায় প্রবেশের বাধার কারণে এসব তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালায়। এর জবাবে গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরুর পর সেখানে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দেয়। উপকূলীয় এই ভূখণ্ডের বিশ লাখের বেশি মানুষ ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধের কারণে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ মারাত্মক অপুষ্টির কবলে পড়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসক ও ত্রাণ সংস্থাগুলো।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজার প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন দিনের পর দিন না খেয়ে থাকছেন এবং ‘হাজার হাজার মানুষ’ চরম দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাদানকারী জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ শনিবার জানিয়েছে, তাদের কাছে গাজার সব মানুষের জন্য তিন মাসেরও বেশি সময় চলার মতো খাবার মজুদ রয়েছে। তবে তা গুদামে আটকা পড়ে আছে এবং বিতরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের প্রধান দাবিগুলোর একটি হলো গাজায় ত্রাণ প্রবাহ নিশ্চিত করা। পাশাপাশি তারা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে।

ইসরাইলি সরকারি তথ্য মতে, ২০২৩ সালে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই বেসামরিক লোক।

এদিকে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৫৮ হাজার ৭৬৫ জন নিহত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
রাজধানীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু
হজ ও ওমরাহ পালনকে সহজ ও সাশ্রয়ী করার প্রয়াস অব্যাহত থাকবে : বিমান সচিব
অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বারের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক প্রকাশ
বিএনপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজনীতি বিশ্বাস করে : সেলিমুজ্জামান
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ঠেকাতে ইতিহাস চর্চায় মনোযোগ দিতে হবে : ড. মাহমুদুর রহমান
বাংলাদেশে সবার অধিকার সমান, এই দেশ সবার : সেনাবাহিনী প্রধান
ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে সোমবার ওয়াশিংটন যাচ্ছেন জেলেনস্কি
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া এতো রক্তপাত দেখিনি: মাহবুব মোর্শেদ
হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক ৪ লেনে ও বড়াইগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের দাবিতে মানববন্ধন
নতুন বাংলাদেশ গড়তে কোনো বিভাজন নয় : আমীর খসরু 
১০