ঢাকা, ২৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ব্রাজিল বুধবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় ‘গণহত্যা’ সংঘটনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় যোগ দিতে চায়।
ব্রাসিলিয়া থেকে এএফপি জানায়, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই মামলায় ‘আনুষ্ঠানিক হস্তক্ষেপের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে’ রয়েছে। কলম্বিয়া, লিবিয়া ও মেক্সিকোর মতো দেশ ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলায় যোগ দিয়েছে এবং আরও বহু দেশ তা সমর্থন জানিয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা হেগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটি দায়ের করে। এতে বলা হয়, গাজায় ইসরাইলি হামলা ১৯৪৮ সালের গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক জাতিসংঘ কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। তবে ইসরাইল এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও মে মাসে আইসিজে রায় দেয়, গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর সময় ইসরাইলকে অবশ্যই ‘গণহত্যা প্রতিরোধে’ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে দুর্ভিক্ষ রোধে জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানও অন্তর্ভুক্ত।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় বেসামরিকদের ওপর ‘নির্বিচারে সহিংসতা’ চালানো হচ্ছে এবং ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চলমান বর্বরতার মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের এক প্রাণঘাতী হামলার মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকে ইসরাইল গাজায় অনবরত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ যুদ্ধ বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বেড়েছে।
বুধবার ইসরাইল গাজায় দীর্ঘস্থায়ী খাদ্য সংকট সৃষ্টির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে শতাধিক ত্রাণ ও মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ‘দুর্ভিক্ষ’ ছড়িয়ে পড়ছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বারবার গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন অনুসারে, কোনো জাতীয়, জাতিগত, বর্ণগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে সংঘটিত পাঁচটি নির্দিষ্ট কাজকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।