এআই নিয়ন্ত্রণে ‘বিশ্বব্যাপী যৌথ উদ্যোগের’ তাগিদ জাতিসংঘের প্রযুক্তি প্রধানের

বাসস
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫২

ঢাকা, ২৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্রুত অগ্রসর হওয়ায় এর নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী একটি সমন্বিত কাঠামো তৈরি করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষ প্রযুক্তি কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ভিন্ন ভিন্ন ও খণ্ডিত পন্থা গ্রহণ করলে ঝুঁকি এবং বৈষম্য আরও বাড়তে পারে।

জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) প্রধান ডরিন বগদান-মার্টিন জেনেভায় এএফপিকে বলেন, তিনি আশাবাদী যে এআই ‘মানবজাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে’।

তবে এই প্রযুক্তিকে ঘিরে ব্যাপক চাকরি হারানোর আশঙ্কা, ভুয়া ভিডিও (ডিপফেইক), ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা এবং সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির মতো উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, সঠিক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গঠনে এখনই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

বগদান-মার্টিন বলেন, ‘একটি সঠিক বৈশ্বিক কাঠামো তৈরি করা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি এই মন্তব্য করেন এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আগ্রাসী, কম-বিধিনিষেধ নির্ভর এআই কৌশল ঘোষণা করেছেন, যার লক্ষ্য হলো চীনের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে রাখা।

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রকাশিত ৯০টির বেশি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এআই উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে।

এই ব্যাপারে মন্তব্য চাইলে বগদান-মার্টিন সরাসরি সমালোচনা না করে বলেন, তিনি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ‘হজম’ করার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, ‘এখন বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন পথে এগোচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক ধরনের পন্থা আছে, চীনের আছে ভিন্ন পথ, এখন যুক্তরাষ্ট্রও তাদের কৌশল দেখাচ্ছে।’

‘এখন সময় এসেছে এসব পথ যেন একে অপরের সঙ্গে সংলাপে বসে,’ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, এখনো বিশ্বজুড়ে ৮৫% দেশের এআই নিয়ে কোনো জাতীয় নীতি বা কৌশলই নেই।

বর্তমানে যেসব দেশ এআই নীতি গ্রহণ করেছে, তাদের প্রায় সবাই উদ্ভাবন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনিয়োগে মনোযোগী—তবে কতটা বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে, এই প্রশ্নটি এখনো খোলামেলা আলোচনা দাবি করে।

বগদান-মার্টিন বলেন, এআইয়ের সম্ভাবনা অভাবনীয়- শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি খাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তবে এর সুফল যেন সবার কাছে পৌঁছে তা নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি সতর্ক করেন, যদি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা না হয়, তবে এআই ‘বৈষম্য বৃদ্ধির’ প্রতীক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

‘বিশ্বে এখনো ২.৬ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না, মানে তারা এআই থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত,’ বলেন তিনি।

আইটিইউর ১৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী মহাসচিব বগদান-মার্টিন বলেন, প্রযুক্তি জগতে নারীদের সম্পৃক্ততা বিশেষভাবে এআই খাতে প্রয়োজন।

‘আমাদের এখনো যথেষ্ট নারী অংশগ্রহণ নেইৃ বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে,’ বলেন তিনি।

চার সন্তানের জননী এই ৫৯ বছর বয়সী কর্মকর্তা বলেন, এই পদে প্রথম নারী হিসেবে কাজ করতে পারা গর্বের। তবে তিনি এটাও স্বীকার করেন, তার ওপর কেবল দায়িত্ব নয়, ‘অতিরিক্ত সফলতা’ দেখানোর চাপও আছে।

বর্তমান মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় নির্বাচন করার পরিকল্পনার কথাও জানান বগদান-মার্টিন। ট্রাম্প প্রশাসনও তাকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সমর্থন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এখনো অনেক কাজ বাকি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে বৃক্ষরোপণ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
মেসিহীন ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করল মায়ামি
লক্ষ্মীপুরে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত
মাগুরায় অধিক মূল্যে সার বিক্রি করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
পিরোজপুরে পানিবন্দি অসহায় মানুষদের মাঝে বিএনপি’র ত্রাণ বিতরণ
সুদের হার কমাতে ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও স্থির থাকার ইঙ্গিত মার্কিন ফেডের
আবারও ২শ রান করে হারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ
‘দুর্ভিক্ষ’ না ‘অনাহার’? গাজার মানবিক বিপর্যয় সংজ্ঞায়নের চ্যালেঞ্জ
জুলাই মাসের প্রথম ২৬ দিনে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৩.৯৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে
তুরস্কে সাড়ে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড
১০