শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়লাভ করাতে না পারলে, এই দেশকে বিএনপি-জামায়াত মিলে বিরানভূমি করে ফেলবে। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আগস্ট ট্রাজেডি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আজ এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র ও বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে চিরতরে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। এই ষড়যন্ত্র রুখতে হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও জয়লাভ করাতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ হবে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।
আনিসুল হক বলেন, আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। যেন বিএনপি জামায়াত ধ্বংসের রাজনীতি করতে না পারে। তাদের সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও তেশরা নভেম্বরের নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধীদের বিচারতো দূরের কথা পুরস্কার হিসেবে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি রাজাকার, আল-বদরকে নিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন। শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় প্রকাশে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করা হবে বলেও এ সময় জানান আইনমন্ত্রী। এ নিয়ে আনিসুল হক বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করতে পারে, নতুন প্রজন্ম ভাবতে পারে, আমরা কি এটি প্রতিহিংসার জন্য করছি? না, আমরা এটা প্রতিহিংসার জন্য করছি না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই কলঙ্কময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি প্রয়োজন। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এবং বাংলাদেশকে যেন কেউ পুনর্বার আঘাত করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য সেই পরিচয়গুলো বাংলাদেশের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জানা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা সেই প্রয়োজনটুকু মেটানোর জন্য একটি কমিশন গঠন করব এবং সেটি হবে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিশন। এই কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিহাস ঘেঁটে, ইতিহাসের ওপর গবেষণা করে সত্য প্রতিষ্ঠা করে এটি জনগণের কাছে রেখে যাব আমরা। নতুন প্রজন্ম যারা আসবে, তারা জানবে কারা ষড়যন্ত্রকারী এবং কুশীলব ছিল, তাদের পরিবার সম্পর্কেও যেন সচেতন থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে যেন আর কোনো ষড়যন্ত্র তারা করতে না পারে, সেজন্য এটি করা হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যা চেষ্টার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, রমনা বটমূলে বোমা হামলাসহ সারা দেশের সব জেলা আদালতে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সরকারের মদদে। এগুলোর অর্থ বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়িত করা। সেজন্য তারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। এখনও সে চেষ্টা অব্যাহত আছে। এতে তাদের লাভ হবে ৩০ লাখ শহীদকে অপমান করা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নষ্ট করা এবং তাঁকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা। কিন্তু আমরা সেটা হতে দিবো না।
আইনমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা গত প্রায় ১৫ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে এবং এই বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি দুঃখ করে বলেন, সেসময় জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা কালেও হাইকোর্টের ৭ জন বিচারপতি বিনা কারণে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার শুনানি করতে বিব্রত বোধ করেছিলেন। এই সাত জন বিচারপতিকে বিএনপি ২০০২ সালে পুরস্কৃত করে আপিল বিভাগে নিয়েছিলেন।
নো মাইনরিটি দর্শন নিয়ে পথচলা সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহম্মদ আলী সিকদার, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. উত্তম বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আফিজুর রহমান, জাতীয় গ্রন্থাগারের পরিচালক মিনার মনসুর।