বাসস
  ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৯:২৮

জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রাকসান্দের ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ 

ঢাকা, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : বাংলাদেশের জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাকসান্দ এশিয়ার নোবেল খ্যাত রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন ভারত,  ফিলিপাইন ও পূর্ব  তিমুরের আরো তিন জন। আজ র‌্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে এবারের পুরস্কার জিয়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়। ফিলিপাইনের রাজধানী  ম্যানিলায় অবস্থিত র‌্যামন ম্যাগসেসে  অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার প্রদান করে থাকে। 
বাংলাদেশের জাগো ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও  জানানা হয়,  ২০২৩ ইমার্জেন্ট লিডারশিপ বিভাগে ২০২৩ রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন করভি রাকসান্দ। জনসেবা থেকে সামাজিক উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। 
১৯৫৭ সালে প্রাক্তন ফিলিপিনো রাষ্ট্রপতি রামোন ম্যাগসেসে’র স্মৃতি ও সম্মানে এবং রকেফেলার  ব্রাদার্স ফান্ড দ্বারা পরিচালিত রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার এশিয়া মহাদেশেকে প্রভাবিত করে, এমন সব ব্যক্তিদের সততা, সাহস এবং নিঃস্বার্থ সেবার মূল্যকে উৎসাহিত করে। এই বছর পুরস্কার প্রাপ্তির  মাধ্যমে করভি রাকসান্দ এ পর্যন্ত এই সম্মানে ভূষিত ৩৪৪ জন অসামান্য ব্যক্তি এবং সংস্থার এক বিশিষ্ট তালিকায় যুক্ত হলেন। 
২০২৩ রামোন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ডের জন্য করভি রাকসান্দকে নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে পুরস্কার কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, একটি স্বচ্ছল ও আরামদায়ক জীবনযাপনের সকল সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তা থেকে সরে এসে করভি’র সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নিরলস কাজ করা এবং শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণে তার শক্তিশালী, দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং হাজার হাজার তরুণকে অনুপ্রাণিত করছে। পুরস্কার কমিটি করভি রাকসান্দ’র অদম্য চেতনা, দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং সামাজিক রূপান্তরের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতিকে অভিনন্দন জানায়।
পুরস্কারের প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় করভি রাখসান্দ বলেন, ‘এই পুরষ্কারটি কেবল আমার নয়, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যারা এই অবিশ্বাস্য যাত্রার আমার সাথে অংশীদার হয়েছেন। আমরা একসাথে প্রমাণ করতে পেরেছি তরুণরা কেবল একটি জাতির প্রতিশ্রুতির বাহক নয়, তারা  প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নকারিও হতে পারে।’
করভি রাকসান্দ যখন যাত্রা শুরু করেছিলেন, তখন বাংলাদেশের রাস্তায়  ময়লা-কুড়ানো একদল পথশিশু দেখে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। শুরুতে ২০০৭ সালে ঢাকার রায়ের বাজার বস্তিতে একটি ভাড়া  রুম এবং মাত্র ১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে  জাগো ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তারপর থেকে, ফাউন্ডেশনটি দ্রুত বেড়ে উঠেছে এবং এখন পর্যন্ত  সারা বাংলাদেশে ৩০ হাজারেরও বেশি  শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে, সরকার-স্বীকৃত, ইংরেজি ভাষায় চালিত শিক্ষা প্রদান করেছে। 
সামাজিক উন্নয়নের প্রচেষ্টার জন্য করভি রাকসান্দ আরও বেশ  কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে  ২০১০ সালে এইচআরএইচ  প্রিন্স অফ ওয়েলস থেকে আন্তর্জাতিক বিভাগে মোজাইক ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড, ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস ,২০১৭ সালে অ্যান্ড্রু ই, রাইস অনারেবল মেনশন অ্যাওয়ার্ড, ২০২১ সালে যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃক কমনওয়েলথ  পয়েন্ট অফ লাইট পুরস্কার, ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও  ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক শেখ হাসিনা যুব স্বেচ্ছাসেবক  পুরস্কার অন্যতম।
করভি রাকসান্দ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল Ñ জাসদের সহসভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক নুরুল আকতারের বড় ছেলে । তাঁর দাদা সন্দ্বীপের ব্যাবসায়ী নেতা ও সমাজসেবক প্রয়াত মৌলভী আজিজুর রহমান।